৩ আগস্ট ২০২৫ রবিবার
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:১৭ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

ফিরে দেখা ১৬ জুলাই: আবু সাঈদের মৃত্যুতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ রূপ নেয় স্ফুলিঙ্গে

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:১৭ এএম
ফিরে দেখা ১৬ জুলাই

১৬ জুলাই ২০২৪ — অকুতোভয় ও দুঃসাহসের রাষ্ট্রীয় প্রতীক হয়ে উঠেন রংপুরের আবু সাঈদ। পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীর মৃত্যু একতাবদ্ধ করে গোটা দেশকে। এদিন কঠোর রূপ নেয় কোটা আন্দোলন; শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কেননা তার মৃত্যু নাড়িয়ে দেয় সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জনগণের বিশ্বাসের ভিত। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ রূপ নেয় স্ফুলিঙ্গে।

এদিন দুপুর পৌনে ১টায় রংপুরের বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রওনা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের উদ্দেশে। পথে ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে আন্দোলনকারীদের বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় লাঠিচার্জ। এসময় পুলিশি বাধা পেরিয়ে মিছিল এগিয়ে যায়। তবে প্রেস ক্লাবের সামনে আবারো মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ বাগ্‌বিতণ্ডার পর মিছিলটি আবারো এগিয়ে যায়।

এরপর লালবাগে মিছিলে যুক্ত হন আবু সাইদসহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ১ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ লাঠিচার্জের পাশাপাশি টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

অন্য শিক্ষার্থীরা পুলিশের গুলি ও টিয়ার শেলের মুখে পিছু হটলেও, একা দাঁড়িয়ে ছিলেন আবু সাইদ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে, তাকে উদ্ধারে সবার আগে ছুটে যান আরসিসিআই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আয়ান। পরে সহপাঠীরা তাকে নিয়ে প্রথমে যান পার্ক মোড়। সেখান থেকে রিকশায় নেওয়া হয় কৃষি অফিস পর্যন্ত। এরপর অটোরিকশায় হাসপাতালে পৌঁছান তারা। বেলা ৩টা ৫ মিনিটে সাইদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এরপর, স্ট্রেচারে মরদেহ নিয়েই ক্যাম্পাসের দিকে রওনা হন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ডেপুটি কমিশনার মোড়ে (ডিসি) মরদেহ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে পুলিশ। প্রথম দফায় ব্যর্থ হলেও, ব্যাকোলজি মোড় থেকে মরদেহ ছিনিয়ে নেয় তারা।

এদিকে, রাত ১২টায় মরদেহ নিয়ে আবু সাইদের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের গাড়িবহর। পৌঁছানোর পরপরই দাফনের চেষ্টা চালানো হয়।

গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তার শরীর। ক্ষতবিক্ষত সেই মরদেহের গোসল যারা করিয়েছিলেন, তাদের বক্তব্যও মিলে যায় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বক্তব্যের সঙ্গে। শিক্ষার্থী আবু সাইদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলন নেয় নতুন মাত্রা।

তখনকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-এর অন্যতম সমন্বয়ক বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমে জানান, সেদিন এক অনলাইন মিটিংয়ে রংপুরে আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করেছে এমন খবর পাই। তখন ওই মিটিংয়েই সিদ্ধান্ত হয় আর কোনো সংলাপ হবে না। রক্ত মাড়িয়ে কোনো সংলাপ নয়।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x