ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে দুই উপজেলায় মোট ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১২৩৭ জন আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (০৯ জুলাই) ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে ২৭৯টি পরিবারের ১২৩৭ জন আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৫৪৫ জন, নারী ৫২৯ জন, শিশু ১৬৩ জন। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে ২০৫টি গবাদি পশু আনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গরু ১৬০টি, ছাগল ৪৫টি। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে বন্যার কবলে পড়েছে সাড়ে ১১ হাজার মানুষ। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখায় ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম (মোবাইল নম্বর-01818-444500, 01336-586693) খোলা হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরো বাঁধ ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৪০০ করে মোট ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্গতদের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ২৫৪৭ জন স্বেচ্ছাসেবক।
প্রসঙ্গত, ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মঙ্গলবার রাতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৫টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো মানুষ।