ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তিনি বলেছেন, এই মানবিক সাহায্যবাহী বহর তেল আবিবের জন্য কোনো হুমকি নয়।
ফ্লোটিলা ইস্যুতে তিনি ও তার সরকার সারা রাত জেগে ছিলেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছেন- ডেনমার্কে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের বৈঠকে এমনটাই জানান সানচেজ। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস ইতোমধ্যে ইসরায়েলি সরকারকে জানিয়েছেন যে কেবল আমাদের নাগরিকদের নয়, ফ্লোটিলার সব সদস্যের অধিকার রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।’
সানচেজ স্পেনের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক সুরক্ষা ও আইনি অধিকার নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন এবং ইসরায়েলের পদক্ষেপে এসব অধিকার যেন ক্ষুণ্ন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। আমি বহুবার বলেছি—এই ফ্লোটিলা ইসরায়েলি সরকারের জন্য কোনো হুমকি নয়। তাই আমরা আশা করি, ইসরায়েলের পদক্ষেপও ফ্লোটিলার জন্য হুমকির কারণ হবে না। সতর্ক করেন সানচেজ।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং তাদের ঘরে ফেরা। সরকারি ফ্লোটিলা ট্র্যাকার অনুসারে, বুধবার রাত থেকে ইসরায়েলি নৌবাহিনী অন্তত ২১টি জাহাজে হামলা চালিয়ে ৩১৭ জন কর্মীকে আটক করেছে। আটককৃতদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফ্লোটিলা মূলত খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রীসহ মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণে অঞ্চলটি কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়ছে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি।
গত মার্চে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ আটকে দিয়ে অবরোধ আরও কঠোর করে। এতে সীমান্তে ত্রাণ ট্রাক জমে থাকলেও গাজার ভেতরে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ইসরায়েলি হামলার পাশাপাশি দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে বহু ফিলিস্তিনি। এমনকি সীমিত ত্রাণ শিবিরে খাদ্য আনতে গিয়েও ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে মারা যাচ্ছে অনেকে।