৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার
প্রকাশ : ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১৯ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে গ্রিস

প্রকাশ : ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১৯ এএম

আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য কঠোর শাস্তি ও নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুততর করছে গ্রিস। বুধবার দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস হয়েছে। এই আইনের আওতায় আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া কিছু বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে গ্রিস।

চলতি বছর দেশটির দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল বৃদ্ধির পর অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থান হিসেবে ওই আইন পাস করেছে গ্রিস। বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫-২০১৬ সালের অভিবাসন সংকটের সময় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটি ছিল সামনের সারিতে। ওই সময় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী গ্রিস হয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন।

এরপর থেকে অভিবাসীদের পৌঁছানোর সংখ্যা কমে যায়। তবে চলতি বছর লিবিয়া থেকে ক্রিট ও গাভদোস দ্বীপ হয়ে দেশটিতে অভিবাসীদের আগমনের হার বেড়ে যায়। যে কারণে গ্রিসের সরকার অস্থায়ীভাবে উত্তর আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচিত তৃতীয় দেশ থেকে ইউরোপের দক্ষিণপ্রান্তের গ্রিসে অবৈধভাবে প্রবেশ করা এবং আশ্রয়ের অধিকারী নন, এমন অভিবাসীদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। অথবা আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া অভিবাসীদের কমপক্ষে ২৪ মাস আটক এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হবে।

সংসদে পাস হওয়া নতুন এই আইন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিসের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকারের অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার সরকার উত্তর সীমান্তে বেড়া নির্মাণ এবং সমুদ্র টহল জোরদার করেছে, যাতে অভিবাসীরা সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারেন।

এর আগে, মঙ্গলবার দেশটির সংসদে অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী থানোস প্লেভরিস বলেন, যারা দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করতে চান, সেই গ্রিক নাগরিকদের অধিকারই অগ্রাধিকার পাবে। আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর যারা অবৈধভাবে গ্রিসে অবস্থান করছেন, তাদের অধিকার তার চেয়ে বেশি নয়।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) সতর্ক করে বলেছে, গ্রিসের নতুন আইন আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে, এমন অভিবাসীদের শাস্তির ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। সংস্থাটি দ্রুততর আশ্রয় প্রক্রিয়া চালু করার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে শরণার্থী এবং অশরণার্থীদের দ্রুত শনাক্ত করে আলাদা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

গ্রিস বলেছে, জুলাইয়ে আশ্রয় আবেদন স্থগিত করার পর শত শত অনিয়মিত অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসে আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া অভিবাসীদের জন্য পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মিসরে আরও ফেরত পাঠানোর ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন গ্রিস সরকার সমুদ্র ও স্থল সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের জোরপূর্বক ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। এ বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা বলেছে, গ্রিসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ১২টি ঘটনার তদন্ত চলছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x