১৭ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ১১:২১ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

বাড়ছে নদ-নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, নতুন করে বন্যার শঙ্কা

প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ১১:২১ পিএম

👁 30 views

সিলেট অফিস
ভারতের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। সোমবার (২ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল গুলোতে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এরই মধ্যে জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর তিনটি স্থানে ডাইক ভেঙে হু-হু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ডুবতে শুরু করেছে। উপজেলার ছবড়িয়া, সেনাপতির চক, ইছাপুর, পিল্লাকান্দি, আমলশীদ ও খলাছড়া ইউনিয়নের একাধিক স্থানে ডাইক উপচে পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রারাই গ্রামের পাশে কুশিয়ারা নদীর ডাইক দিয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। সোমবার ভোররাতে একই ইউনিয়নের বাখরশাল ও সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামের পাশে নদীর ডাইক ভেঙে হু হু করে পানি প্রবেশ করেছে।এছাড়া কেছরী গ্রামের পাশে প্রতিরক্ষা বাধ উপচে দিয়ে জকিগঞ্জ শহরে পানি ঢোকা শুরু করেছে। মাইজকান্দি গ্রামের কাছে ডাইকের একাংশ নদীগর্ভে ধসে পড়েছে।

জকিগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রী ইউনিয়নের বাসিন্দা লিমন তালুকদার বলেন, হঠাৎ করে ঢল নামায় কুশিয়ারা নদীর পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড় ঘেঁষে অনেক ঘরবাড়ি আছে, এখনই পানি না নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত হওয়ার ভয় আছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট পানি বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্ট বিপৎসীমার ১৮৫ সেন্টিমিটার, শেওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া মনু নদীর মৌলভীবাজার পয়েন্ট পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও ধলাই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে স্বস্তির খবর হলো—সারি, ডাউকি ও সারি-গোয়াইন নদ-নদীর পানি কমতির দিকে।

পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে উজানের ঢলের প্রভাব বেশি পড়েছে সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলোতে।

সিলেট আবহায়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উজানে ত্রিপুরায় ৬৯ মিলিমিটার, মিজোরামে ৫৫, কোচবিহারে ৫০ ও মেঘালয় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। নিচু এলাকা ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। সেইসাথে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দফতর গুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x