বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল গতকাল (বৃহস্পতিবার) তিনজন উপদেষ্টা মনোনীত করেছেন। বিসিবির ২০২৪ সালের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বিসিবি সভাপতি সর্বোচ্চ ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে পারেন। এই কমিটির কাছ থেকে প্রয়োজনে উপদেশ ও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন বিসিবি সভাপতি।
বিসিবি গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৮তে উপদেষ্টা কমিটি গঠনের একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রথমই রয়েছে। সেখানে উল্লেখ আছে–‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি দেশের খ্যাতনামা ক্রিকেটার/প্রখ্যাত ক্রিকেট সংগঠকদের মধ্য হইতে সর্বোচ্চ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করিতে পারিবেন।’
গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট লেখা খ্যাতনামা ক্রিকেটার/প্রখ্যাত ক্রিকেট সংগঠক। বিসিবির বিজ্ঞপ্তিতে তিনজন মনোনীত উপদেষ্টার মধ্যে খ্যাতনামা ক্রিকেটার কিংবা প্রখ্যাত ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে কারো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মো. সাখাওয়াত হোসেনকে হসপিটালিটি শিল্পে বিশেষজ্ঞ, সৈয়দ আবিদ হোসাইন সামিকে স্পোর্টস মিডিয়া অ্যানালিস্ট ও ব্যারিস্টার শেখ মাহাদীকে আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিসিবির আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে তিনজনের কারো পরিচয়েই সাবেক ক্রিকেটার কিংবা বিশিষ্ট সংগঠক পরিচয় নেই। অথচ উপদেষ্টা মনোনীত হওয়ার অন্যতম শর্তই এটি।
মনোনীত তিন ব্যক্তির মধ্যে সৈয়দ আবিদ হোসাইন সামির ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিতি রয়েছে। তিনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেলেছেন। এখন মিডিয়ায় কর্মরত এবং ক্রিকেট এনালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। বাকি দুজন ক্রীড়াঙ্গনে একেবারে অপরিচিত। তিনজনের কেউই গঠনতন্ত্রের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য নন বলে ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট সবার মত।
গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৮তে উপদেষ্টা মনোনীত করার নির্দেশনার পাশাপাশি উপদেষ্টাদের এখতিয়ারও বর্ণিত রয়েছে। সভাপতি চাইলে উপদেষ্টাদের ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। তবে উপদেষ্টাদের কোনো ভোটাধিকার থাকবে না। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি প্রয়োজনে এই কমিটির যেকোনো সদস্যকে অথবা সকল সদস্যকে যেকোনো স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
বিসিবির পক্ষ থেকে এই তিনজন উপদেষ্টা মনোনীত করার আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি। তবে প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে, সাখাওয়াত হোসেন ক্রিকেট ট্যুরিজম উপদেষ্টা, সৈয়দ আবিদ হোসাইন সামি ক্রিকেট উপদেষ্টা ও ব্যারিস্টার শেখ মাহাদী আইন উপদেষ্টা হিসেবে গণ্য হবেন। এসংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মতামত কিংবা পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন বিসিবি সভাপতি।
উপদেষ্টা নিয়োগ প্রসঙ্গে সাবেক ক্রিকেটার ও কোয়াবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বলেন, ‘একজন ক্রিকেটারের যেমন প্লেয়িং কন্ডিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত, অনুরূপভাবে ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনায় সভাপতিসহ সবাইকেই বোর্ডের গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। এ তিনজন উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তিতে ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্রের ব্যত্যয় ঘটেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন সুদীর্ঘ (১৮ বছর) দিনের কাউন্সিলর হিসেবে আমি পত্রের মাধ্যমে বিসিবির সম্মানিত সভাপতির কাছে এটার ব্যাখ্যা জানতে চাইব। আশা করি, তিনি এটা ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করবেন।’