বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপ বাড়ছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) দেশীয় অর্থায়নে ঘাটতি পূরণে দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যেসব শর্তযুক্ত ঋণ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর সুদ ও আসল পরিশোধে এখন বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এতে সরকারের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে—অর্থাৎ জুলাই থেকে মে পর্যন্ত—সরকার বৈদেশিক ঋণের সুদ ও মূলধন মিলিয়ে ৩৭৮ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই পরিমাণ ২৩ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে মূল ঋণের অংশ হিসেবে, আর ১৪০ কোটি ডলার গেছে সুদের খাতে।
অন্যদিকে, এই সময়ে বৈদেশিক ঋণছাড় কমে এসেছে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ঋণছাড় হয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় কম। সেই সঙ্গে নতুন করে পাওয়া ঋণের প্রতিশ্রুতিও কমেছে। এ বছর ১১ মাসে ৫৪৮ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছে, যেখানে আগের বছর এই অঙ্ক ছিল ৭৯২ কোটি ডলার।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর মনে করেন, বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়লেও সেটার বিপরীতে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহিত হচ্ছে না। তিনি বলেন, যত টাকা আসছে, প্রায় পুরোটাই ঋণ পরিশোধে চলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অর্থনীতিতে একটি চক্র তৈরি হবে, যা ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাছাইয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। একইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। আগাম পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশকে এই ঋণচাপ থেকে বের করে আনতে হবে।