শরীয়তপুরে পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা তীরবর্তী মানুষ। গত দেড় মাসের ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে শতাধিক পরিবার। হুমকির মুখে তীরবর্তী হাট-বাজার, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ প্রায় ৬ শতাধিক স্থাপনা। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেললেও থামছে না ভাঙন। তবে আগামী বর্ষার আগেই স্থায়ী তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পদ্মা পাড়ের মানুষের কান্না, দীর্ঘশ্বাস আর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট এলাকা। স্বজনদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই কারও। চোখের সামনে তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের ঠিকানা বিলীন হচ্ছে জাজিরার উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি, মাঝির ঘাটসহ আশপাশের এলাকায়। এরই মধ্যে জাজিরার ছাত্তার মাদবর বাজারের ১৬টি দোকান ও ২৭টি বসতঘর পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়েছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৭০টি বসতঘর ও ৩৬টি দোকান। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে জাজিরার পদ্মা তীরের ৬ শতাধিক স্থাপনা।
কোনো রকমে আহার ও অনাহারে গৃহপালিত পশু-পাখির সঙ্গে একই ঘরে বসবাস করছে ভাঙনকবলিত মানুষ। নেই ঘর তোলার মতো জায়গা, রয়েছে অর্থ সংকটও। সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণসহ পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।
ভাঙন রোধ ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে করণীয় নিয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান জানান, ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন মিললেই আগামী বর্ষার আগেই পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। শরীয়তপুরের ৭৭ কিলোমিটার এলাকা ঘিরে রেখেছে পদ্মা ও মেঘনা নদী। এর অধিকাংশ এলাকা ভাঙনপ্রবণ। ভাঙন রক্ষায় প্রায় ২৬ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।