সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মাছুমপুর নতুনপাড়ায় এক বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছ থেকে দুই বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বস্তাভর্তি এসব টাকা গণনা শুরু হলে পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া টাকার মালিক প্রায় ৬৫ বছর বয়সী মোছা. সালেয়া বেগম। তিনি গত চার দশক ধরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সিরাজগঞ্জ কওমি জুট মিলের বারান্দায় একা বসবাস করতেন। স্থানীয়রা বলছেন, সালেয়া বেগম খুব কমই নিজের জন্য টাকা খরচ করতেন, এমনকি অসুস্থ হলেও কারও সাহায্য নিতে চাইতেন না।
তার মেয়ে মোছা. শাপলা খাতুন বলেন, মা আমাদের সঙ্গে থাকতো না। একা থাকতেই পছন্দ করতেন। আজ তার থাকার জায়গা থেকে অনেক টাকা পাওয়া গেছে। আমি এখন মায়ের সঙ্গে আছি। এই টাকা দিয়েই তার চিকিৎসা করানো হবে।
সালেয়ার জামাতা রিকশাচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ। আমরা চিকিৎসার কথা বললে বলতেন, টাকা নেই। আজ হঠাৎ স্থানীয়রা তার আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে বারান্দার নিচ থেকে দুই বস্তা টাকা উদ্ধার করে।
স্থানীয় যুবক শুভ বলেন, ‘চা খেতে আসছিলাম। দেখি, রিকশায় করে দুই বস্তা টাকা আনা হচ্ছে। বিশ্বাসই হচ্ছিল না। সালেয়া বেগম ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করেন—কিন্তু কারও ধারণা ছিল না, তিনি এত টাকা জমিয়ে রেখেছেন। আমার মনে হয়, দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মতো হবে।’
এলাকাবাসীর ধারণা, দীর্ঘদিন অরক্ষিতভাবে রাখায় সঞ্চিত টাকার একটি অংশ ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। তবে বাকি টাকা গণনার কাজ চলছে। এলাকার মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই টাকা সালেয়া বেগমের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খরচেই ব্যয় করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. শিপু বলেন, ‘সালেয়া বেগম প্রায় ৪০ বছর ধরে এভাবে টাকা গুছিয়েছেন। এখন তিনি খুবই অসুস্থ। এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার চিকিৎসা ও যত্নের জন্য এই টাকা খরচ করা হবে।