ভারতের বিমান বাহিনী দাবি করেছে, গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান যে চরম সংঘাতে জড়িয়েছিল, তাতে এফ-১৬ ও জেএফ-১৭ মডেলের পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। সংঘাতের প্রায় ১৫০ দিন পর শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ভারতের বিমান বাহিনী দিবসে উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন দেশটির বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং। তিনি এর আগেও পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি সামরিক বিমান ধ্বংসের কথা বলেছিলেন। তবে এবারই প্রথম মডেলের নাম প্রকাশ করলেন।
অমর প্রীত সিং বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে, আমাদের কাছে একটি দূরপাল্লার হামলার প্রমাণ রয়েছে… পাশাপাশি উচ্চপ্রযুক্তির এফ-১৬ ও জেএফ-১৭ ক্লাসের পাঁচটি যুদ্ধবিমান (ভূপাতিত করার) তথ্য আমাদের সিস্টেম দিচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এফ-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি যুদ্ধবিমান, আর চীনের সহায়তায় জেএফ-১৭ তৈরি করেছে পাকিস্তান।
ভারতের বিমান বাহিনীর এই দাবির বিষয়ে রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত অভিযোগ করে, পাকিস্তান সন্ত্রাসী হামলা চালাতে সহায়তা করেছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ নাকচ করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানায়।
এ নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে গত ৬ মে দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে আকস্মিক বিমান হামলা চালায় ভারত। যার নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের দাবি, জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
ভারতের হামলার পর অপারেশস বুনিয়ানুন মারসুস’ নামে পাল্টা হামলা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী। এতে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এবং সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। টানা কয়েকদিনের সংঘাতের পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।
সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করে, ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর জবাবে গত ৭ মে রাতে তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে; যার মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান, একটা রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ এবং একটা এসইউ-৩০। সংঘাতের পর পাকিস্তান দাবি করেছিল, সংঘর্ষ চলাকালে তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যার মধ্যে ফরাসি রাফালও রয়েছে। ভারত কিছু ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও ছয়টি বিমান হারানোর দাবি অস্বীকার করে।