কুড়িগ্রামের চিলমারী-হরিপুর তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ‘মাওলানা ভাসানী সেতু’র বিদ্যুৎ সংযোগের ৩০০ মিটার তার চুরি হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত শেষের দিকে সেতুর দক্ষিণপ্রান্তের সুন্দরগঞ্জের হরিপুর মধ্য বোচাগাড়ি এলাকায় মাটি খুঁড়ে মাটির নিচ দিয়ে স্থাপন করা তারগুলো কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এতে সেতুর প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশজুড়ে ল্যাম্পপোস্টে আলো জ্বলেনি, অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে।
এর আগে সেদিন বিকেলে সেতুটির উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা সেতুর দক্ষিণপ্রান্তের সুন্দরগঞ্জের হরিপুর মধ্য বোচাগাড়ি এলাকায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বক্স থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে মাটির নিচে স্থাপিত মূল্যবান কেবলগুলো কেটে নিয়ে যায়। এতে সেতু ও দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
গাইবান্ধা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেতুটির বিদ্যুৎ লাইন মাটির নীচ দিয়ে স্থাপন করেছিল। কেবলগুলো চুরি যাওয়ায় দ্রুত লাইন মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি, ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার।’ এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অন্ধকারে সেতু পারাপার এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় ছিনতাই ও ডাকাতির আশঙ্কা করছেন সেতু দিয়ে চলাচলকারীরা। ইতোমধ্যে ঘটনাটি নিয়ে এলাকার মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রমনা পাত্রখাতা এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের কারণে সন্ধ্যা নামতে অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে সেতু এলাকা। এতে চুরি ও ছিনতাইয়ের শঙ্কা বাড়ছে। এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ জানায়নি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে টহল জোরদার রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে চিলমারী-সুন্দরগঞ্জের হরিপুর তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ১৪৯০ মিটার পিসি গার্ডারের এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় ৯২৫ কোটি টাকা।