এবার কোরবানীর চামড়ার দাম কম থাকায় মাগুরার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। জেলায় কোরবানি ঈদে সংগৃহিত পশুর চামড়া নিয়ে এবছর বড় লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এ অবস্থা থেকে মুক্তি
পেতে চামড়া ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণের দাবি করছেন। চামড়া নিয়ে সরকারের নতুন নীতি গ্রহণ জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশার আলো জাগালেও চামড়ার কম দাম তাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
মাগুরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, এবার ঈদুল আজহায় জেলায় মোট ৬৬৯৭৮টি গরু জবাই করা হয়েছে। মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা চড়া দামে চামড়া কিনেছিলেন। কিন্তু বিক্রির ক্ষেত্রে কম দামের কারণে তাদের চামড়া বিক্রি করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
মাগুরা শহরের জামে মসজিদ রোডের মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী শাজাহান বলেন, ঢাকার বাইরের জন্য সরকার প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢাকা শহরের জন্য ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমরা সরকারি নির্ধারিত হারে চামড়া বিক্রি করতে পারিনি। সরকারি নির্ধারিত হার অনুসারে মাঝারি আকারের গরুর চামড়ার জন্য আমাদের ১২০০ টাকা পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের মাত্র ৬০০ টাকা দর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আমরা প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ২০ টাকায় বিক্রি করেছি। এই দাম আমাদের ক্রয়ের হারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
মাগুরা শহরের নান্দুয়ালী এলাকার মৌসুমী ব্যবসায়ী ঝন্টু মিয়া বলেন, আমি প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কিনেছিলাম। কিন্তু কোনো ব্যবসায়ী আমার চামড়া কিনতে রাজি না হওয়ায় আমি আমার চামড়া ঝোপঝাড়ে ফেলে দিয়েছি। এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ আমি কীভাবে পরিশোধ করব?
মাগুরা শহরের পারলা এলাকার চামড়া বিক্রেতা রাশেদ খান বলেন, সরকার লবণ দিয়ে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। তাহলে আমরা কীভাবে সরকারি মূল্য পরিশোধ করব? কারণ মৌসুমী ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই লবণহীন চামড়া বিক্রি করতে এসেছে।
মাগুরা পুরাতন বাজারের চামড়া ব্যবসায়ী আতিয়ার ও সত্তার মোল্যা জানান, এবারের চামড়ার দাম কম থাকার কারণে আমরা দাম পাচ্ছি না। কোরবানির চামড়া ক্রয় করে তার সঠিক পরিচর্যা করতে সময় লাগে। তারপর সেই
চামড়া যদি বিক্রির সময় দাম না পায় তাহলে আমরা লসে থাকব। সরকার চামড়ার দাম যদি বেশি বৃদ্ধি না করে
তাহলে আমরা বিপাকে পড়ব।