হানি ট্র্যাপ, যাকে বাংলায় বলা হয় ভালোবাসার ফাঁদ। দেশজুড়ে শব্দটি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সম্প্রতি মডেল মেঘনা আলম গ্রেপ্তারের পর ফের আলোচনায় হানি ট্র্যাপ। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি এক রাষ্ট্রদূতকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মেঘনা আলম। পরে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করেন ওই রাষ্ট্রদূত।
এরপরই গ্রেপ্তার হন মেঘনা ও তার সহযোগী দেওয়ান সমির। এই সমির সানজানা ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। সমির ভাটারা থানার একটি মামলায় পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন। সেখানে মেঘনা ও তাকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। যা যাচাই-বাছাই করছে গোয়েন্দারা।
সূত্র জানিয়েছে, মেঘনা বরিশাল থেকে এসএসসি পাসের ঢাকায় এসে ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে এইচএসসির পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর পরিচিতি লাভ করেন। সেটাকে কাজে লাগিয়েই প্রভাবশালীদের পেছনে ছুটতে শুরু করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এক কর্মকর্তা জানান, ইংরেজিতে কথা বলতে পারদর্শী মেঘনা। তার এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন তিনি।
অভিযোগ আছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, বিদেশি কূটনীতিক, রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করতেন। এখন মডেল থেকে আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কের মধ্যেও ঢুকে গেছেন এই নারী। গেল সপ্তাহে মেঘনা আলমকে আটকের পর নতুন করে ধানমন্ডি মডেল থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সূত্র বলছে, মেঘনার সঙ্গে একটি উন্নত ও প্রভাবশালী দেশের রাষ্ট্রদূতের সম্পর্ক ছিল। যিনি গত বছর বাংলাদেশ থেকে নিজ দেশে ফেরত যান। ওই রাষ্ট্রদূত পরবর্তীতে আবার বাংলাদেশে এসেছেন নিজ দেশের একটি কোম্পানির প্রতিনিধি হয়ে। তাছাড়া সার্কভুক্ত একটি দেশের রাষ্ট্রদূতকেও মেঘলা প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন।
তিনিও নিজ দেশে ফিরে যাবার পর আবারও বাংলাদেশে এসেছেন এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন। এই দুই রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কথিত এই মডেল। তারা দু’জনই মৌখিক ভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সংস্থাকে বিষয়টি বলেছেন। প্রয়োজনে লিখিত অভিযোগ দিতে রাজি আছেন বলে একটি সূত্র ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন।
এর বাইরে মেঘনার সঙ্গে একাধিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকের সুসম্পর্ক ছিল। তাদের দিয়েও অনেক ফাঁদ পেতেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের চক্রে বেশকয়েকজন সুন্দরী নারী আছে। যারা টার্গেট ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে নিজেরা বিভিন্ন কাজ বাগিয়ে নেন।