মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় গুয়াগাছিয়ায় চালু হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের টহলরত পুলিশ বোর্ডকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছেন জলদস্যুর। আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়েছে। এতে দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। আজ সোমবার বিকেল ৫টার পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষ প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ৫-৬টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। ক্যাম্পের কাছাকাছি জায়গায় এসে প্রথমে ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। তখন ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে ৬টার দিকে ট্রলার নিয়ে সীমান্তবর্তী উত্তর মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারী নৌ ডাকাত সদস্যরা।
গজারিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, নৌ ডাকাত নয়ন ও পিয়াসের নেতৃত্বে ৫-৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত ৩০-৩৫ জন নৌ ডাকাত পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও নৌ ডাকাতদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। ওসি আরও জানান, গোলাগুলির ঘটনায় পুলিশ ২৪ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। বিপরীতে নৌ ডাকাতরা অগণিত গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। তবে নৌ ডাকাতদের কেউ আহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, জামালপুর গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনে নৌ ডাকাতদের অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাতে পারছে না। সোমবার তারা নৌযান থেকে চাঁদা তুলতে নদীতে নামলে পুলিশ থাকায় সুবিধা করতে পারেনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওপর গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালিয়েছে। আগামীতে নৌ ডাকাতদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, শুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে গত ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়।