১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ২:৩৪ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ২:৩৪ পিএম

👁 25 views

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বাকি ৬ আসামিকে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন আদালত। সোমবার (২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় আজ (সোমবার) রায় ঘোষণা করা হলো।

আদালতে আপিলের শুনানি করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়াও এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবণী আক্তার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সুমাইয়া বিনতে আজিজ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর প্রধান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গিয়াস উদ্দিন গাজী। মামলায় আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরী, আইনজীবী শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম ও দুলাল মল্লিক।

রায়ের দিন ঠিক করার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখার আরজি জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে আদালত আগামী ২ জুন রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রদীপকে ঘটনার পরে জড়িত করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। তাই তাকে খালাস দেওয়ার আরজি জানানো হয়েছে। বিকল্প হিসেবে দণ্ড কমানোর কথা বলেছেন শুনানিতে।

গত ২৩ মে শুরু হয়ে উচ্চ আদালতে প্রতি কার্যদিবসে অব্যাহতভাবে শুনানি নিয়ে আজকে শেষ করা হয়। মামলায় এফআইআর, চার্জশিট, সাক্ষী, জেরা, পেপারবুক থেকে আসামি ও সাক্ষীদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি উপস্থাপন করা হয়। এরপর অভিযোগ গঠন, বিচারিক আদালতের রায় পাঠ শেষে মামলায় রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ করা হয়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা। ওই মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব; কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন। কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা এসব আপিল ও আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে। সিনহা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে, যা একই বছর ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

অন্যদিকে, দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করতে হয়।পেপারবুক প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x