বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনের জন্য কিছু জরুরি ও মৌলিক সংস্কার করতে হবে। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করে নির্বাচন হলে, সেটি হবে নির্বাচনের জন্য গণহত্যা। এটি আমাদের সন্তানদের সাথে বেইমানি হবে। আমরা বেইমানি করব না। কাউকে বেইমানি করতে দেব না। মৌলিক ও জরুরি সংস্কারকে বাধা দেওয়া যাবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবার ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ফ্যাসিজম সৃষ্টি হবে না। কালো টাকা ও পেশিশক্তির রাস্তা বন্ধ হবে। দেশে কোনো ফ্যাসিবাদ থাকতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা লড়াই করে যাব। আমরা ক্ষমতা চাই না; আমরা সকলের জন্য নিরাপদ ও সম্মানজনক একটি দেশ চাই।
তিনি শনিবার বিকেলে ফেনীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত রোকন সম্মেলন ও সুধী সমাবেশে বক্তব্যের সময় এসব কথা বলেন।

ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুফতি আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে এসময় শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমাদেরকে উন্নয়নের মহাসড়কের কথা বলেছে। কিন্তু আমরা ওই উন্নয়নের মহাসড়ক দেখিনি। আমরা ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচারের উন্নয়ন তাদের দেখেছি। রূপপুরে ৭২ হাজার টাকার বালিশ দেখেছি। বিরোধী দল ও মতের ওপর দানবীয় নির্যাতন ও বেপরোয়া তাণ্ডব দেখেছি। তারা জামায়াতের ১ থেকে ১১ নম্বর নেতা পর্যন্ত সিরিয়ালে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছে। রিমোট কন্ট্রোলের রায় দিয়ে তারা শুধু আমাদেরকে খুন করে নাই, তারা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে খুন করে দিয়েছে।

এসময় জামায়াত আমির বলেন, জাহেলি যুগ থেকে এ পর্যন্ত সব সময় যুবকদের হাতেই সমাজ পরিবর্তন হয়েছে। যুবকরাই পরিবর্তনের নিয়ামক। জাতি হিসেবে আমরা আবু সাঈদদের কাছে ঋণী, তাদের বন্ধুদের কাছে ঋণী। তারা জীবন দিয়ে ৫ আগস্টের পরে জাতিকে মুক্ত করেছে।
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে যখন কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং পুলিশ সদস্য ছিল না। তখন আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে মানুষের জান মালের নিরাপত্তায় পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ ১৫ দিন দায়িত্ব পালনের পর আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরে ফিরেছি। যখন থানাগুলোতে কাজের কোনো পরিবেশ ছিল না, তখন আমরা ২৩২টি থানায় যাবতীয় সরঞ্জাম দিয়ে কাজ শুরু করে পুলিশের সাথে ছিলাম। তাই আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলের পুলিশ হবেন না। আপনারা নাগরিকদের পুলিশ হন।

ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহের মোহাম্মদ মাছুম ও মুহাম্মদ শাহজাহান।
বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এ কে এম সামছুদ্দিন প্রমুখ।