২২ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

যেভাবে হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে সুমাইয়া

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের খাস কামরায় তিনি জবানবন্দি দেন।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আদালত তাঁর জবানবন্দি সন্ধ্যা পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই বৈঠকে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ওই বৈঠকে বক্তব্য রেখেছিলেন বলেও স্বীকার করেছেন।

তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ দেওয়ার পরেই নেতা–কর্মীরা ঢাকায় সমবেত হবে এবং পরে শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এসব পরিকল্পনা হয়েছিল বৈঠকে। বৈঠকে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথও নেন অংশগ্রহণকারীরা। গত ৭ আগস্ট জাফরিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগে গত বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে ডিবির একটি দল সুমাইয়াকে আটক করে।

রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের গোপন বৈঠকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে এর আগে মেজর সাদিককে আটক করা হয়। সেনা আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি ক্যান্টনমেন্টে আছেন। সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় জাফরিনকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করে।

এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।

বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তারা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন।

মামলায় গ্রেপ্তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাদুজ্জামান মোল্লার স্ত্রী শামীমা নাসরিন শম্পা ও বরগুনার সোহেল রানার দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত ১৬ জুলাই কারাগারে পাঠানো হয়। ২৯ জুলাই ৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গার আজিজুল মিজি, ফরিদপুরের আনজুমান আরা বেগম, ঢাকার সাভারের সুলতান মাহমুদ ওরফে তছলিম মাহমুদ, পটুয়াখালীর মো. নাঈম হাওলাদার, ভোলা জেলার মো. হেলাল উদ্দিন, নরসিংদীর মো. ইমরান হোসেন, শরিয়ত পুরের মুক্তা আক্তার, রাজশাহীর নবিউল প্রকাশ নবু।

গত ৩০ জুলাই চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা হলেন, মানিকগঞ্জ জেলার রাজীব মিয়া, নওগাঁর ওমর ফারুক সৈকত, রাজধানীর বংশালের হাজী নাসির আহমেদ, নোয়াখালী মো. এনাম হোসেন সুজন, ৩১ জুলাই নেত্রকোনার জাহিদ হোসেন, সিলেটের আনার মিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

৩ আগস্ট রাজবাড়ীর প্রীতম কুমার দে ও শফিকুল ইসলাম সজিবকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত মোট ২২ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদনান নামে আরেক আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। গত সাত আগস্ট রিমান্ড শুনানির সময় জাফরিন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বলেন ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠকের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x