রাশিয়ায় ৮ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ভয়াবহ সুনামির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সুনামির প্রথম কয়েকটি ঢেউ রুশ শাসিত সেভেরো-কুরিলস্ক বন্দর এলাকায় আছড়ে পড়েছে এবং এতে শহরটির বড় অংশ প্লাবিত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ড্রোন ভিডিওতে দেখা গেছে, শক্তিশালী ঢেউয়ে বন্দর এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন ছড়িয়ে আছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই এলাকায় একাধিক সুনামি ঢেউ আঘাত হানে। সেভেরো-কুরিলস্ক শহরের মেয়র আলেকজান্ডার ওভসিয়াননিকভ জানিয়েছেন, এর মধ্যে তৃতীয় ঢেউটি ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর, যা বন্দর অবকাঠামোর বড় ধরনের ক্ষতি করেছে।
তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউটি সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। এতে বন্দরে থাকা আমাদের ক্ষুদ্র নৌবহর পুরোটাই সাগরে টেনে নিয়ে যায়। পানির চাপে কিছু জাহাজ উপকূলে ভেসে এসেছে, কিছু এখনো প্রণালিজুড়ে ঘুরছে।’ তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের পরপরই সেভেরো-কুরিলস্ক শহরে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয় এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। রুশ সংবাদ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তি’ জানিয়েছে, এই বন্দরে সুনামির ঢেউয়ের উচ্চতা পাঁচ মিটার পর্যন্ত পৌঁছায়।
সুনামি সাধারণত সমুদ্রের নিচে হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা ভূমিধসের ফলে সৃষ্টি হয়। যদিও সব ভূমিকম্প সুনামির জন্ম দেয় না, তবে ৭.০ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে সুনামি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আর ৮.০ মাত্রা ছাড়ালেই তা তাৎক্ষণিক বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের আগাম সতর্কতা মানা এবং যথাসময়ে সরে যাওয়াই সবচেয়ে কার্যকর উপায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেভেরো-কুরিলস্ক শহরের বর্তমান পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ধ্বংসাবশেষ অপসারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ শুরু করেছে।