বিশ্ব এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। যেকোনো মুহূর্তে এই আশঙ্কা সত্যি হতে পারে—এমনই হুশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিশ্বকে দিন দিন বিপজ্জনক এক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করছেন তিনি। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব এখন আর সীমিত কোনো উত্তেজনা নয়; বরং তা মোড় নিচ্ছে এক ভয়াবহ দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে। ইসরায়েলের ধারাবাহিক টার্গেট কিলিংয়ের জবাবে তেহরানও সরাসরি পাল্টা আঘাত হানছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ও মোসাদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় তেলআবিবের আয়রন ডোমো। এই হামলা প্রতিহত করতেও ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু প্রতিশোধ নয়, বরং ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বিশাল আঘাত। এরই মধ্যে এবার তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের মূল অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন বলেন, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সংঘর্ষের বিপুল আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। আমরা বৈশ্বিক যুদ্ধের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন, সব সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত।
ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণেরও সমালোচনা করে পুতিন বলেন, এই জোট বারবার রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগকে উপেক্ষা করেছে। এটি পশ্চিমাদের উপনিবেশবাদী নীতিরই আরেকটি রূপ। পুতিন আরও দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে আশ্বস্ত করেছেন, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় রুশ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে।
এছাড়াও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামিনিকে হত্যার প্রসঙ্গে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে পুতিন বলেন, “যদি ইসরায়েল সত্যিই আয়াতুল্লাহ খামিনিকে হত্যার কথা বিবেচনা করে, তবে আমি আশা করি সেটা কেবল কথার কথা হিসেবেই থাকবে।
তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা আয়াতুল্লাহ খামিনিকে হত্যা করার কথা বলছে, তারা যেন মনে রাখে—তাতে তারা এক ভয়ঙ্কর ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেবে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে সংঘাতে বড় শক্তিগুলোর সম্পৃক্ততা এবং কূটনৈতিক টানাপড়েনের পেছনে যে ইতিহাস রচিত হচ্ছে, তার ফল হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আর তার সূচনা হতে পারে মধ্যপ্রাচ্য থেকেই।