১৭ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ৫ জুন ২০২৫, ৯:১০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

লাভ কম হলেও গরু ছাড়ব, কালকের আশা রাখি না

প্রকাশ : ৫ জুন ২০২৫, ৯:১০ পিএম

👁 37 views

আর মাত্র একদিন পরই ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম আকর্ষণ পশু ক্রয়, যা এবার সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের বাজেট ও সাধের সমন্বয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য মাঝারি ও ছোট আকারের গরু কোরবানি দেওয়া। অনেকে আবার মাংসের স্বাদের বিবেচনায় দেশি গরু কিনতে চান।

সবকিছু মিলিয়ে তুলনামূলক মাঝারি কিংবা ছোট গরুর চাহিদা এবার বেশি। বিক্রিও বেশি হচ্ছে এই আকারের গরু। এর ফলে তুলনামূলক কম বিক্রি হচ্ছে বড় গরু। এতে বিপাকে আছেন বড় গরু নিয়ে হাটে আসা ব্যাপারীরা।বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাজধানীর তেজগাঁও টেকনিক্যাল মাঠে গরুর হাট ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে হাটের এ চালচিত্র জানা গেছে।

রাস্তার পাশে গরুর হাট বসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলজুড়ে হাট ছড়িয়ে পড়েছে। হাটে ৭০ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা দামের গরু উঠেছে। বাজেট ও ব্যবস্থাপনা সুবিধার কারণে ক্রেতারা বেশি ঝুঁকছেন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরুর দিকে।তেজগাঁও হাটে আসা ক্রেতা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছোট ও মাঝারি আকারের গরু কেনা। প্রয়োজনে একাধিক নিতে চাই। তবে বাজারে তুলনামূলকভাবে দাম বেশি। কারণ দেশি গরুর সরবরাহ তুলনামূলক কম।

বিক্রেতা ইয়ামিন বলেন, আমরা এবার বড় গরুর চেয়ে মাঝারি আকারের গরু বেশি এনেছি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঝারি গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় গরু দেখতে মানুষ আসে, তবে কিনে কম।হাট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাঝারি আকৃতির গরুর কেনাবেচা তুলনামূলকভাবে বেশি হচ্ছে। হাটে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে, যা বড় গরুর বিক্রয়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

দুপুরে সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে দামাদামি করছেন। কোনো কোনো বিক্রেতা মনের মতো দাম না পেলে গরু ছাড়ছেন না। অনেক ক্রেতা শেষ মুহূর্তে দাম কমতে পারে সেই আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন। যদিও আজ সকাল থেকেই গরু বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছে হাট কর্তৃপক্ষ।জামালপুর থেকে ২৭টি গরু এনেছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার।

তিনি বলেন, আমার কাছে ৫টি বড় গরু ছাড়া সবই মাঝারি ও ছোট গরু। আজ সকালেই ১২টির মতো গরু বিক্রি করেছি। আমি আগামীকালের আশায় থাকতে চাচ্ছি না। মোটামুটি লাভ হলেও গরু ছেড়ে দিতে চাই।মাঝারি আকারের গরু কিনেছেন মাসুদ নামে এক ক্রেতা। তিনি বলেন, প্রথমে ইচ্ছা ছিল বড় আকারের গরু কিনব। পরে আমার অংশীদারদের পরামর্শে ছোট আকারের গরু কেনার চেষ্টা করেছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ৩২ হাজার দিয়ে মাঝারি আকারের একটা গরু কিনলাম।কোরবানির হাটে মধ্যবিত্তের ভরসা মাঝারি গরু, বিক্রেতারা বাড়তি দামে খুশি

বলেন, প্রথম দিকে গরু-ছাগল বিক্রির পরিমাণ কম হলেও বর্তমানে পশু বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। দামও আগের তুলনায় কমেছে। মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বরাবরই বেশি। আমরা ৫ শতাংশ হারে হাসিল আদায় করছি। গরু বিক্রি বেড়েছে।ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় এবার ১৯টি অস্থায়ী পশুর হাট বসছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসেছে ১০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বসেছে ৯টি অস্থায়ী হাট। ঈদুল আজহার দিনসহ মোট ৫ দিন নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

অস্থায়ী ১৯টি হাট ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় স্থায়ী গাবতলী হাট এবং দক্ষিণ সিটির আওতায় স্থায়ী সারুলিয়া হাটেও কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এ হিসেবে এ বছর ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকায় কোরবানির পশু কেনা-বেচার জন্য মোট ২১টি স্থানে হাট বসেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাজধানীর আফতাবনগর ও মেরাদিয়ায় এবার পশুর হাট বসবে না।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x