শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এর জেরে তিন দিন ধরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের পর আজ বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) বিএনপির এক নেতাকে মারধর এবং তার মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ, জেলা ছাত্রদল ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে এইচ এম জাকিরকে আহ্বায়ক এবং সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়। তবে কমিটিতে ‘অছাত্র’ ও ‘বিতর্কিত’ ব্যক্তিরা স্থান পেয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে একাংশ বিক্ষোভে নামে। ওই দিন শহরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।
বিক্ষোভকারীরা আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের চৌরঙ্গীর মোড়ে অবস্থান নেন। প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুই কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা সড়ক ছেড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এসময় বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রুহুল আমীন মুন্সিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তার মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়। স্থানীয়রা তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন; পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
রুহুল আমীনের স্ত্রী মনিরা আক্তার বলেন, কলেজের সামনে কয়েকজন নেতাকর্মী মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার স্বামীকে মারধর করেন এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তারা মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, আগের সংঘর্ষে রুহুল আমীন অংশ নিয়েছিলেন। এর জেরেই এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার বলেন, ‘দলত্যাগী ও অছাত্রদের দিয়ে প্রহসনের কমিটি করা হয়েছে। গ্রহণযোগ্য কমিটি না দিলে আন্দোলন আরও বাড়বে।’
এদিকে নবনিযুক্ত সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি করা হয়েছে। যারা হামলায় জড়িত ও জনভোগান্তি বাড়াচ্ছে, তারা ছাত্রদলের কেউ নয়, সন্ত্রাসী। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
জেলা বিএনপির একাধিক নেতা এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, বিক্ষোভকারীদের বোঝানো হয়েছিল যেন জনদুর্ভোগ না হয়। তারা পরে সড়ক ছেড়ে দেয়। বিএনপি নেতার ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়, তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।