খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে গাজা উপত্যকার উদ্দেশে যাত্রা করা একটি নতুন সাহায্যবাহী নৌবহরকে আটক করেছে ইজরায়েলি বাহিনী। এতে রয়েছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রি শহিদুল আলমসহ ১৫০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অধিকার কর্মী। আটকের পর দখলদার ইজরায়েলি সরকার জানিয়েছে, জাহাজ ও আরোহীদের একটি ইজরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সব যাত্রী নিরাপদে ও সুস্থ আছেন। তারা আরও জানায়, যাত্রীদের দ্রুত ইসরায়েল থেকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেবে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (Freedom Flotilla Coalition) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিন্স টু গাজা (Thousand Madleens to Gaza)—যারা যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছিল—তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট নয়টি জাহাজ ও ১৫০ জন আরোহী সম্বলিত এই নৌবহরটিকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় থামিয়ে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে ইজরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈধ নৌ অবরোধ ভঙ্গ করে একটি যুদ্ধ অঞ্চলে প্রবেশের আরও একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা ভেস্তে গেল।
এর আগে, গত সপ্তাহেও ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ-সহ ৪৭৯ জন ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীকে বহনকারী ৪২টি নৌকার একটি সাহায্য বহর থামিয়ে দিয়েছিল। সেই বহরের প্রায় সব আরোহীকে দ্রুত বিতাড়িত করা হয়, তবে ছয়জন এখনও আটক আছেন বলে খবর।
নতুন প্রচেষ্টার আয়োজকরা প্রথমে জানিয়েছিলেন যে আজ বুধবার ভোরের দিকে গাজা উপকূল থেকে ১২০ নটিক্যাল মাইল দূরে তাদের তিনটি নৌকাকে আটক করা হয়েছে। তবে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটি লাইভ ট্র্যাকার দেখায় যে সবকটি, অর্থাৎ নয়টি নৌকাই আটক করা হয়েছে। এই ১৫০ জন আরোহী বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হস্তক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং জলদস্যুতার কাজ বলে অভিহিত করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস পরিচালিত আক্রমণে দক্ষিণ ইজরায়েলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন অপহৃত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় তাদের অভিযান শুরু করে। সেই থেকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইজরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৭ হাজার ১৮৩ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই ইজরায়েল গাজার উপকূলীয় এলাকায় নৌ অবরোধ জারি রেখেছে।