এবারের এসএসসি পরীক্ষায় চরম ফলবিপর্যয় ঘটেছে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়নের রাহাতেন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান বিভাগে চারজন ও মানবিকে সাতজন মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিল মাত্র ১১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী, বাকিরা অকৃতকার্য। ফলে পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯ শতাংশে।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ মোট সাতজন শিক্ষক কর্মরত। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১৫ জন। এত স্বল্প শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও এমন করুণ ফলাফলে হতবাক স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এধরনের ফলাফলে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের দায় এড়ানো চলে না।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা সাহেদা খাতুন চৌধুরী বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমার অবসর, কিন্তু তার আগেই এমন ফলাফল আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসত না, কোচিং নির্ভরতায় অভ্যস্ত। কখনো দুজন, কখনো তিনজন ক্লাসে উপস্থিত থাকত। পাশাপাশি এবারের গণিত বিষয়ের অবজেকটিভ প্রশ্ন তুলনামূলক কঠিন হওয়াও ফলবিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হতে পারে।
আগামী ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বর্তমান শিক্ষার্থী ও অকৃতকার্য শিক্ষার্থী মিলিয়ে ৩০ জন অংশ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তুতির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে আমাদের বিদ্যালয়ের ফলাফল সন্তোষজনক ছিল। ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২০ সালে আমরা শতভাগ পাসের কৃতিত্ব অর্জন করেছিলাম।
প্রসঙ্গত, উপজেলাটিতে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৩৮৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ৬৯৩ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছে ৬৯৪ জন। গড় পাসের হার মাত্র ৪৯.৯৬ শতাংশ। পুরো উপজেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২৬ জন শিক্ষার্থী। দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬১.৩৬ শতাংশ হলেও কোনো শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করতে পারেনি। এছাড়াও, কারিগরি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩.৩৯ শতাংশ। ফুলগাজী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে আটজন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। এছাড়া দাখিল ভোকেশনালে ২৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, পাসের হার ৮৫.৭১ শতাংশ।