শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের শ্রীবরদীতে টাকা আদায়ের নামে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বেঁধে রাখার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে৷ এর আগে, রবিবার তাকে স্থানীয় একটি বাজার থেকে তুলে নিয়ে গাছে বেঁধে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী নূর আমিন (৩৮)। তিনি উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নূর আমিনকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে আশপাশের কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে আছেন। এসময় তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শোনা যায়। তবে, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে কোন মারধর বা নির্যাতনের ঘটনা নেই।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন জানান, তিন বছর আগে ভাটিলংগরপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নূর আমিন। কিছুদিন সুদের টাকা পরিশোধ করলেও পরে অনিয়ম শুরু হয়। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। জলিল পরে আদালতে একটি মামলাও করেন।
একপর্যায়ে সুদের টাকা না পেয়ে জলিল ওই ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেল জব্দ প্রায় এক বছর নিজ বাড়িতে রেখে দেন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি নূর আমিনের। পরে গতকাল রবিবার স্থানীয় একটি
বাজার থেকে নূর আমিনকে তুলে এনে তাকে জলিলের বাড়ির আঙিনায় একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়।
ভুক্তভোগী নূর আমিন বলেন, রবিবার আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে গরুচোর বলেছে। আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি তার কাছে কিছু টাকা নিয়েছিলাম৷ কিছু টাকা দিয়েও দিয়েছি। সে জোর করে আমার মোটরসাইকেল আটকে তার বাড়িতে রেখে দিয়েছে। আমি এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেব। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবির বলেন, নূর আমিন ও আব্দুল জলিল একই গ্রামের বাসিন্দা। টাকার জন্য নূর আমিনকে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল এটা সত্যি। পরে দুই পক্ষকে বসিয়ে অক্টোবরের মধ্যে টাকা পরিশোধের শর্তে আপস-মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত আব্দুল জলিল বলেন, আমি অনেক দিন ধরেই তার কাছে টাকা পাই। কিন্তু টাকা দেই-দিচ্ছে বলে এখনো দেইনি। এরপর তার কোন খোঁজও পাইনি। পরে তার খোঁজ পেয়ে ধরে এনেছি। কিন্তু তাকে কোন মারধর করা হয়নি। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে টাকা দেওয়ার শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।