২২ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১০:০৩ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

সালিশে জরিমানায় মুক্ত ধর্ষক, নারীর জুটল তালাক

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১০:০৩ পিএম

বাড়িতে একা ছিলেন গৃহবধূ। তাঁর স্বামীর পূর্বপরিচিত পশুচিকিৎসক এসে তা টের পেয়ে ধর্ষণ করেন ওই নারীকে। ভুক্তভোগীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পিটুনি দেয় ধর্ষককে। সেদিন দুপুরেই শতাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে বসে সালিশ। ধর্ষণের শিকার নারী বারবার শাস্তির দাবি করলেও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেন ধর্ষককে। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে তালাক দিতেও তাঁর স্বামীকে নির্দেশ দেন সালিশকারীরা।

১৭ আগস্ট নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সালিশে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় লোকজন। তাদের প্রশ্ন, ফৌজদারি অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও সালিশ কীভাবে হলো, তা তাদের বোধগম্য নয়। এতে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হচ্ছে।

এ ঘটনায় জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান পশুচিকিৎসক শামীম হোসেন। প্রতিবেশীরা জানায়, ভুক্তভোগী নারী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তাঁর স্বামীর সঙ্গে কৌশলে সখ্য গড়ে তোলেন শামীম। প্রায়ই তাঁর বাড়িতে যাতায়াত করতেন। ১৭ আগস্ট সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে টের পান, গৃহবধূ ছাড়া কেউ নেই। তখনই তাঁকে ধর্ষণ করেন। গৃহবধূর চিৎকারে প্রতিবেশীরা শামীমকে আটক করে পিটুনি দেয়।

দুপুরে সেখানে সালিশ ডাকেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি। সেখানে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বারবার শামীমের শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘সে আমার জীবন নষ্ট করেছে, আমি তাকে ছাড়ব না।’ কিন্তু স্থানীয় মাতব্বর মোয়াজ্জেম হোসেন ও মাজেদ আলীর নেতৃত্বে সালিশে অভিযুক্ত শামীমকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। পাশাপাশি ওই গৃহবধূকে তাঁর স্বামী তালাক দেবেন, এমন সিদ্ধান্তও জানিয়ে দেন। নগদে জরিমানা পরিশোধ করে ছাড়া পান শামীম। একই সময় দেনমোহর পরিশোধ না করেই গৃহবধূকে তালাক দেন তাঁর স্বামী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্বামীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শামীম জরিমানা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। সালিশে নেতৃত্ব দেওয়া মাতব্বর মোয়াজ্জেম হোসেন বুধবার মোবাইল ফোনে বলেন, ছেলের পরিবার আর মেয়ের পরিবার উভয়েই তালাক চেয়েছিল, তাই এই রায় দেওয়া হয়েছে। জরিমানার টাকা মেয়েকে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা এলাকায় আলোড়ন তুললেও বিষয়টি জানেন না মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন রেজা। তাঁর ভাষ্য, কেউ এ বিষয়টি তাঁকে জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x