অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দুনিয়া ও নিজেকে আবিষ্কারের সুযোগ তৈরি করে স্কাউটসের কার্যক্রম। গৎবাঁধা ছাত্রজীবনে নিজের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আর সুযোগ থাকে না। তোমাকে তোমার সঙ্গে পরিচিত করে দেওয়ার জন্য স্কাউটিং একটা বড় দরজা খুলে দিয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু নিজে নয়, অন্যদেরও নিজেকে চেনার সুযোগ করে দেওয়া যায়।
আজ সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বাংলাদেশ স্কাউটসের দেশব্যাপী আয়োজিত কাব কার্নিভালের উদ্বোধন ও শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের স্কাউটরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে চারজন স্কাউট আত্মাহুতি দিয়েছেন। স্কাউটিংয়ের ইতিহাসে এমন নজির বিশ্বের আর কোথাও নেই।
৭০ বছর আগে (১৯৫৫ সালে) স্কাউট হিসেবে ইউরোপ ও আমেরিকা ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তখন উড়োজাহাজের ভাড়া অনেক বেশি ছিল। তাই লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে জাহাজে করে নেওয়া হয়। এতে আফসোস করার কথা ছিল, কিন্তু হয়ে গেল আনন্দের। আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার যাত্রায় পুরো জাহাজ মাতিয়ে তোলে কয়েকজন স্কাউট- গান-বাজনা, উৎসাহ ও ফুর্তিতে পুরো জাহাজের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে তাদের হাতে। আসার পথেও নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন পর্যন্ত জাহাজেই ছিলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘উড়োজাহাজের ভাড়া বেশি হওয়ায় সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভক্স ওয়াগন কোম্পানির কাছ থেকে সস্তা দামে তিনটি মাইক্রোবাস কিনলাম। টাকা বাঁচানোর জন্য ৬ মাস ধরে পুরো ইউরোপ ঘুরে পাকিস্তান পর্যন্ত ফিরে এলাম। ইউরোপের কোনো জায়গা ভ্রমণ থেকে বাদ পড়েনি।’
অনুষ্ঠানে আন্দোলনকালে নিহত শহীদ স্কাউট সদস্যের পরিবারের হাতে সাহসিকতা পদক এবং বিভিন্ন স্কাউটদের মধ্যে অন্যান্য পদক তুলে দেওয়া হয়। এসময় তিনি দেশব্যাপী আয়োজিত কাব কার্নিভালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সারাদেশে ৫২৭টি জায়গায় একযোগে এই কার্নিভাল শুরু হয়েছে।