৮ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২২ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার যেন দিনের আলোয় চুরি!

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২২ এএম

ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন

ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস (FT) দাবি করেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ লাখ কোটি টাকা) অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত FT-এর অনুসন্ধানী ডকুমেন্টারি ‘Bangladesh’s Missing Billions: Stolen in Plain Sight’-এ এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আন্দোলনকারীদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

ডকুমেন্টারিতে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার করে দেশ থেকে পাচার হয়েছে। অর্থ পাচারের প্রধান পদ্ধতি হিসেবে বলা হয়েছে: ওভার-ইনভয়েসিং ও আন্ডার-ইনভয়েসিং (পণ্যের দাম বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখানো), হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো, বিদেশে সম্পত্তি বিনিয়োগ বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে। ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, যুক্তরাজ্য হয়ে উঠেছে অর্থ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র। লন্ডনের আর্থিক খাত ও রিয়েল এস্টেট বাজারকে টার্গেট করে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক–এর নামও উঠে এসেছে। টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক মন্ত্রী হলেও, রিপোর্টে দাবি করা হয়, দুর্নীতি-সংক্রান্ত এক মামলার পর তাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। যদিও এই অভিযোগ এখনো বিচারাধীন এবং এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ডকুমেন্টারিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী-এর নামে ৩০০টির বেশি সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (SCA) ইতোমধ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে বলে দাবি করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, হাসিনা সরকারের সময়ে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংকগুলো দখল করে নেয়া হয়। অস্ত্রের মুখে অনেক পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অর্থ পাচার রোধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সহযোগিতায় তদন্ত চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

অনেক অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক বলছেন, এত বড় অঙ্কের অর্থ ফেরত আনা কঠিন হবে, তবে এটি সম্ভব যদি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে। অন্যদিকে, সরকারপন্থি ব্যক্তিরা এ ধরণের তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x