১ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ৬:৫১ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

১০০০ মানুষ নিহতের পর শান্তি ফিরল সিরিয়ায়

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ৬:৫১ পিএম

দ্রুজ যোদ্ধা ও প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে চলা সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক হাজার জনের বেশি নিহত হওয়ার পর রবিবার সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে শান্তি ফিরে এসেছে বলে একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা ও এএফপির সংবাদদাতারা জানিয়েছেন। দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী দ্রুজ ও বেদুইনদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে একাধিক চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর শনিবার ঘোষিত একটি যুদ্ধবিরতি এদিন কার্যকর হতে দেখা গেছে।

এই সহিংসতায় পরে ইসলামীপন্থী নেতৃত্বাধীন সরকার, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত সশস্ত্র উপজাতিদেরও জড়িয়ে পড়ে। সুয়েইদা শহরের উপকণ্ঠে থাকা এএফপি সংবাদদাতারা রবিবার সকালে কোনো সংঘর্ষের শব্দ শোনেননি। সরকারের সেনাবাহিনী প্রদেশের কিছু এলাকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে মোতায়েন রয়েছে এবং অন্তত একটি মানবিক সহায়তা বহনকারী কাফেলা দ্রুজ সংখ্যাগরিষ্ঠ শহরের দিকে রওনা হয়েছে।

ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, মধ্যরাত থেকে ‘সুয়েইদায় সতর্ক শান্তি বিরাজ করছে’। সরকারপন্থী নিরাপত্তা বাহিনী উপজাতি যোদ্ধাদের প্রবেশ ঠেকাতে প্রদেশে যাওয়ার সড়কগুলো অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। সংগঠনটি রবিবার নিহতের হালনাগাদ সংখ্যা জানিয়ে বলেছে, গত এক সপ্তাহে সংঘর্ষে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৩৬ জন দ্রুজ যোদ্ধা ও ২৯৮ জন দ্রুজ বেসামরিক নাগরিক, ৩৪২ জন সরকারপন্থী নিরাপত্তা কর্মী ও ২১ জন সুন্নি বেদুইন।

সরকারি বাহিনী সংঘর্ষে বেদুইনদের পক্ষ নিয়ে সহিংসতা চালিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী, দ্রুজ গোষ্ঠীগুলো ও অবজারভেটরি অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, সরকার বাহিনী সুয়েইদায় প্রবেশের পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ নানা নির্যাতন চালিয়েছে। ৩৯ বছর বয়সী চিকিৎসক হানাদি ওবেইদ এএফপিকে বলেন, গত এক সপ্তাহে শহরে এমন শান্ত অবস্থা আর দেখা যায়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার রাতে জানায়, সুয়েইদা শহর ‘সব উপজাতি যোদ্ধা থেকে খালি করা হয়েছে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে’।

এ ছাড়া অবজারভেটরি জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় দ্রুজ যোদ্ধারা শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা শনিবার সুয়েইদায় নতুন করে একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন এবং ইসলামপন্থীদের হাতে দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে সিরিয়ার জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। সিরিয়ার উপজাতি ও বংশগত পরিষদের একজন মুখপাত্র শনিবার রাতে আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘প্রেসিডেন্সির আহ্বান ও চুক্তির শর্ত অনুযায়ী’ যোদ্ধারা শহর ত্যাগ করেছেন।

এক চিকিৎসক রবিবার সুয়েইদা থেকে টেলিফোনে এএফপিকে বলেন, পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত…কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। এখনো কোনো চিকিৎসা বা ত্রাণ সহায়তা পৌঁছয়নি। শহরের বাসিন্দারা এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ ছাড়াই ঘরবন্দি অবস্থায় ছিল এবং খাদ্য সরবরাহও ছিল খুবই অপ্রতুল। সেখানে প্রায় দেড় লাখ মানুষ বসবাস করে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, দামেস্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিকিৎসা সহায়তা প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুসাব আল-আলি জানিয়েছেন, এই সহায়তা সুয়েইদার প্রধান হাসপাতালে পাঠানো হবে, যেখানে মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x