একটি হত্যা মামলায় ২২ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তুহিন।
আজ সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে ১১টার দিকে পাবনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এসময় কয়েক হাজার নেতাকর্মী তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন। পরে তাকে নিয়ে আনন্দ মিছিল করে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হাজির হন নেতাকর্মীরা। তাকে বিএনপির পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও কারামুক্ত যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ খান মন্টু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার, যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুল হক বাবু, নুর মাসুম বগা, সাবেক সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, ডা. আহমেদ মোস্তফা নোমান, সাবেক পৌর মেয়র মোকলেছুর রহমান বাবলু সহ অনেকে।
পরে তুহিনকে নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী গাড়িবহরসহ তার নিজ এলাকা ঈশ্বরদীতে পৌঁছান। সেখানে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শরিফুল ইসলাম তুহিন বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক একটি হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছিল। দেরিতে হলেও মুক্তি পাবার পর তিনি উচ্ছ্বসিত। তিনি ঈশ্বরদীর নেতাকর্মীসহ জেলা বিএনপি নেতাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতে দলের সাথে থেকে মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘তুহিনের মুক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপি আরো শক্তিশালী হলো। দল আরো সুসংগঠিতভাবে সামনে এগিয়ে যাবে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও কিছু রাজনৈতিক দল তারেক রহমানকে কটাক্ষ করে স্লোগান দিয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে কটাক্ষ করার অধিকার কারো নেই। কেউ যদি বিএনপিকে নিয়ে খেলতে চায় তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে তাদের বিদায় নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে একটি হত্যা মামলায় ঈশ্বরদী যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ বেশ কয়েকজন যুবদল নেতাকে ফাঁসিয়ে দেয় একটি মহল। সেই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ২২ বছর কারাভোগ করেন।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চলতি বছরের গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ কারা-২ শাখা থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকার কর্তৃক সাজা মওকুফ করায় ২৯ জন কয়েদির মুক্তির কথা বলা হয়। তাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম তুহিন এর নামও ছিল।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জনপ্রিয় যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিনের মুক্তির খবরে এলাকাবাসী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে খুশির আমেজ বইছে। তার মুক্তির খবরে মোড়ে মোড়ে রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার, ফেস্টুন টাঙিয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। গতকাল রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন নেতাকর্মীরা।