১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ১১:৩০ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

৪ বছরেও চালু হয়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সেবা বঞ্চিত বালাগঞ্জবাসী

প্রকাশ : ২ জুন ২০২৫, ১১:৩০ পিএম

👁 30 views

সিলেট অফিস
উপজেলা পর্যায়ে সর্ব প্রথম সাত তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মিত হয়েছে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায়। এই ভবনটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে ৩১ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু সাত তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ভবনটিতে কার্যক্রম চালু করার অনুমতি না পাওয়ায় স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ কার্যাদেশ অনুমোদন করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)।

ওই বছরের ৩ এপ্রিল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরুর পর ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কাজের মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ৪ বা সাড়ে ৪ বছরেও সাত তলা এ ভবনটিতে স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম শুরু হয়নি।

ভবনটির প্রথম তলায় আউটডোর, দ্বিতীয় তলায় কনসালটেন্ট, তৃতীয় তলায় প্রশাসনিক অফিস, চতুর্থ তলায় স্টোর ও পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ও সপ্তম তলায় নারী-পুরুষের জন্য পৃথক ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, লিফট ছাড়া নতুন ভবনে উঠানামা করা সম্ভব নয়। একটি লিফট চালু করার পর হঠাৎ করে সেটি বিকল হয়ে গেছে। ভবনের সামনে রাখা হয়নি গাড়ি পাকিংয়ের ব্যবস্থা।

এদিকে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে নির্মিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পুরনো ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের নানাবিধ সমস্যা ও জনবল সংকটের কারণে সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্য সেবাদান বিঘ্নিত হচ্ছে। নতুন ভবন নির্মাণ করে হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের দাবি ছিল উপজেলাবাসীর। স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবশেষে সেই দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় রোগীরা বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ পুরোনো ভবনের ওয়ার্ডে বা ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

স্থানীয় উপকারভোগীরা বলছেন, হাসপাতাল ভবনের নানা সমস্যা, জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে আমরা এতদিন কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। সামান্য অসুখ-বিসুখে সিলেট শহরে দৌড়াতে হচ্ছে। নবনির্মিত সাত তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের মাধ্যমে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে, সেটি অবশ্যই আনন্দের বিষয়। নতুন ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর এই অঞ্চলের মানুষ চাহিদা মত স্বাস্থ্য সেবা পাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ বিলম্বে নতুন ভবন চালুর অনুমতি না মেলায় আমরা সেবা বঞ্চিত হয়ে খুবই হতাশ হচ্ছি।

বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হেপি দাস বলেন, হাসপাতালের পুরাতন ভবনে অনেক কষ্ট করে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হচ্ছে। জনবল সংকট তো আছেই। নবনির্মিত ভবনটি দেশের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম সাত তলা বিশিষ্ট ভবন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এখন শুধু অনুমতির জন্য অপেক্ষা।

এ বিষয়ে আলাপকালে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, জনবল সংকটের কারণে সাত তলা ভবনে পুরোদমে কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অবহিত করা করা হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা নতুন ভবনে জনবল বৃদ্ধি ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি চালু করা হবে। হাসপাতালের বন্ধ থাকা প্রতিটি বিভাগ চালু করা হলে স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে। সহজেই উন্নতমানের স্বাস্থ্য সেবা পাবেন প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x