২২ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩:২৫ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

৯০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন অস্ত্র কিনছে ইউক্রেন: জেলেনস্কি

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩:২৫ পিএম

রাশিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধ বন্ধে যেকোনো চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে এ আশ্বস্ত করেছেন। এর প্রেক্ষিতে জেলেনস্কি বলেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে। এর মধ্যে থাকবে যুদ্ধবিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অস্ত্র। খবর- রয়টার্স

তিনি বলেন, ‘কার্যত আমাদের এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবিত প্যাকেজ আছে, যার অর্থমূল্য ৯০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের রপ্তানি চালু হলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনীয় ড্রোন কিনবে। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের সঙ্গে সোমবারের এ বৈঠককে এখন পর্যন্ত ‘সেরা বৈঠক’ মন্তব্য করে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শুধু সমন্বয়ই করবে না, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশীদারও হবে- স্পষ্ট এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি বড় একটি অগ্রগতি বলে আমি মনে করি।’ তবে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে নিরাপত্তা সহায়তা দেবে তা স্পষ্ট করেননি কেউ।

যুদ্ধ বন্ধে চলতি সপ্তাহে শুক্রবার আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলের সোমবার বৈঠকে বসেন ট্রাম্প। এই বৈঠকের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য আসবে। ইউরোপীয় দেশগুলো এতে জড়িত থাকবে। তারা প্রথম প্রতিরক্ষা বাহিনী কারণ তারা সেখানে আছে, তবে আমরা ইউক্রেনকে সাহায্য করব।

মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিশ্রুতিকে ‘একটি বড় পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, গ্যারান্টিগুলো ‘আগামী সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে। ইউক্রেন প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো ধরনের বৈঠকে বসতে প্রস্তুত আছে। ভূখণ্ড বিনিময়ের বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোকচনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা হবে সরাসরি। এটি আমার আর পুতিনের মধ্যে থাকবে।’

ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইউরোপীয় নেতা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছেন তিনি। যুদ্ধরত এই দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে বৈঠকের পর একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই বৈঠকে আমিও থাকব’।

হোয়াইট হাউসে বৈঠক শেষে ওভাল অফিসে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা বলেন। এছাড়া নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টেও একই কথা বলেছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছি। তবে কবে, কোথায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, সেই বিষয়ে কিছু জানাননি।

ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টেলিফোনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। এই দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের পর আমাদের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানে দুই প্রেসিডেন্টের (পুতিন ও জেলেনস্কি) আমি থাকব। তিনি জানান, আজকের বৈঠকগুলোতে মূল আলোচনার বিষয় ছিল ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এ নিশ্চয়তা দেবে, যার সমন্বয় করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মধ্যেই ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একজন কূটনীতিক বৈঠকের মাঝপথে ট্রাম্পের পুতিনকে ফোন করার বিষয়টি রয়টার্সকে জানিয়েছেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে ৪০ মিনিট কথা হয়ে বলে পুতিনের একজন সহকারী জানিয়েছেন। ট্রাম্প–পুতিনের ফোনালাপের পর আবারও বৈঠক শুরু হয়।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বিশ্বে ছয়টি যুদ্ধ থামিয়েছি আমি। এই যুদ্ধ বন্ধ হয়তো সহজ হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু না। এটা সবচেয়ে কঠিন। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, আমরা সমাধান খুঁজে পাব। তিনি আরও বলেন, আজকের বৈঠক শেষ নয়। মানুষ মারা যাচ্ছে, আমরা সেটা থামাতে চাই। আমার বিশ্বাস, পুতিনও যুদ্ধ শেষ করতে চান।

যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এই যুদ্ধ শেষ হবে। জেলেনস্কি চান, পুতিনও চান, গোটা বিশ্বই ক্লান্ত। আমরা এটা থামাব। যুদ্ধবিরতি নয়, সরাসরি শান্তিচুক্তিতে যেতে আগ্রহী আমরা। শান্তিচুক্তি হলে পক্ষগুলো আবার শক্তি সঞ্চয় করে। আমি মনে করি, সরাসরি শান্তিচুক্তিই সঠিক পথ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x