২ আগস্ট ২০২৫ শনিবার
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ৩:৪৫ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

৯৯৯ কলে নোবেলের বাসা খেকে উদ্ধার তরুণী, ৭ মাস নির্যাতন ও ধর্ষণ

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ৩:৪৫ পিএম

ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলায় কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা–পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় নোবেলের বাসা থেকে অপহৃত এক তরুণীকে উদ্ধারসহ নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে বিতর্কিত কণ্ঠশিল্পী নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণীকে অপহরণ ও নিজ বাসায় দীর্ঘ ৭ মাস আটকে রেখে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধোর ও ধর্ষনের বিবরণ দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, স্টুডিও দেখানোর কথা বলে গত বছরের নভেম্বর মাসে পূর্ব পরিচিত ভুক্তভোগীকে (২৫) ডেমরার বাসায় নিয়ে যান নোবেল। বাসায় প্রবেশের পর তরুণীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে অন্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ করেন। এরপর দীর্ঘ সাত মাস ধরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে মারধর ও ধর্ষণ করেন নোবেল। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই তরুণীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে সেটির সূত্র ধরে তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয় এবং নোবেলের সাথে ভিকটিমের মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে যোগাযোগ হতো। গত ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল ভুক্তভোগীর সাথে মোহাম্মদপুর গিয়ে দেখা করে এবং নোবেলের ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর উদ্দেশে বাসায় নিয়ে এসে আরও ২/৩ জন অজ্ঞাত সহযোগীর সহায়তায় নোবেলের বাসায় আটক রাখে।

এছাড়া নোবেল ভিকটিমের মোবাইল ভেঙ্গে ফেলে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণপূর্বক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মে মাসের ১৯ তারিখ ২০২৫ পর্যন্ত ভুক্তভোগীকে নোবেলের বাসায় আটক রাখে।

তবে সম্পতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেল কর্তৃক ভুক্তভোগীকে মারধরের একটি ভাইরাল হয়। যার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে চিনতে পেরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে। ৯৯৯ এর কলের সাপেক্ষে গতকাল রাতে ডেমরা থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে।

তালেবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেমরা থানায় একটি নারী নির্যাতন মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্টুডিও দেখাতে তরুণীকে বাসায় নেন নোবেল, আটকে রেখে ৭ মাস ধরে করেন নির্যাতন ও ধর্ষণ, ৯৯৯ কলে উদ্ধার

এর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে প্রতারণার মামলায় নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। একটা অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন নোবেল। কিন্তু পরে আর তিনি সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এ ঘটনায় ২০২৩ সালে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

প্রসঙ্গত, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জি বাংলার গানের শো সা রে গা মা পা’য় অংশ নিয়ে সবার নজরে আসেন নোবেল। তার গান দর্শকের মনে স্থান করে নেয়। পরে তার বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা পায়। তবে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই তাকে ঘিরে আলচনা-সমালোচনা ছিল। একটা সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে শো করতে গেলেও সেখানেও তাকে নিয়ে সমালচনা হয়। ২০২৩ সালে কুড়িগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন তিনি।কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নোবেলের আচরণে বিরক্ত হয়ে দর্শকরা জুতা ও পানির বোতল ছুড়ে মারেন শিল্পীর দিকে। সেই ঘটনাটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x