২৫ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১১:৫১ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা: হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১১:৫১ পিএম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেছেন, দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও এর ক্লিয়ারেন্স নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা দিতে হয়। অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ দিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. মাহমুদা আলম মিতুর কথা উল্লেখ করেন তিনি।

হাসনাতের অভিযোগ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু কাছে থেকে এমন অর্থ চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকটি কলরেকর্ডও ফাঁস করেছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ফেসবুকে ‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা শিরোনামে এক দীর্ঘ পোস্টে দুদকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন তিনি।

পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, আপনার নামে দুর্নীতির কোন অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা পয়সার অভাব থাকার কথা না, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।

এরপর তিনি লিখেছেন, টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চায়, টাকা দেবেন কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।

অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর। এখানে বড় অংকের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?

দুদকের এসব কাজ এই প্রথম নয় বলে অভিযোগ হাসনাতের। এনসিপির এই নেতা আরও লিখেছেন, হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য ১ লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন। অন্যায় ঘুষ দেননি। কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।

কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই। দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দিন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপর এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।

দুদকের দুর্নীতির বিচারের দাবি জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। এ বিষয়ে তিনি লিখেছেন, হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সে জন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে। এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাব। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x