অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে রুলের শুনানিতে যায়নি রাষ্ট্রপক্ষ। এতে বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
আজ বুধবার (২৫ জুন) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এবিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি তুলে ধরার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও কোর্টে আসেননি কেউই।
এসময় হাইকোর্ট বলেন, এই রুল শুনানির জন্য তিনটি কোর্টে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা সবকিছু বন্ধ রেখে এমন গুরুত্বপূর্ণ শুনানির জন্য বসলাম, আর রাষ্ট্রপক্ষ আসবে না! তা কী করে হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির জন্য ফের আগামী বুধবার (০২ জুলাই) দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
এর আগে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ৭ আইনজীবী রিটটি করেন। পরবর্তীতে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং এসংক্রান্ত ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়।
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৭২ সালের সংবিধানে অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ‘সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা প্রযুক্ত হবে’ শব্দগুলো যুক্ত করা হয়। তবে আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী আইন অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। ফলে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধন আইনের মাধ্যমে বর্তমান ১১৬ অনুচ্ছেদে ওই বিধানটি পুনরায় প্রতিস্থাপন করা হয়।