শেরপুরের শ্রীবরদীতে পাহাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির প্রতিবাদ করায় চোরাকারবারিদের হামলায় আহত হয়েছেন জুলাইযোদ্ধা মো. আরিফ।
শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার কর্ণঝোড়া এলাকার মেঘাদল বাজার এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। পরে আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এঘটনায় নিন্দা জানান। একই সাথে এঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী আরিফ জানান, শ্রীবরদী উপজেলার কর্ণঝোড়া এলাকায় প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করায় বার বার বাধা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। এর আগে, বেশ কয়েকবার তারা বিভিন্ন স্থানে বালুর গাড়ি আটক করে প্রশাসনের নজরে এনেছেন। শুক্রবার সাংগঠনিক কাজে শ্রীবরদী এলাকা ঘুরে মেঘাদল বাজার এলাকায় যান আরিফসহ কয়েকজন। এসময় বাবেলাকোনা এলাকার পাহাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দুটি মাহেন্দ্র ট্রাক্টরে করে বালু পাচার হচ্ছিল। পরে তারা ট্রাক্টর দুটি আটক করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে জানায়। এসময় খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় বালুদস্যু বিপ্লব ও তার অনুসারীরা আরিফসহ তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে আশপাশের লোকজন তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ডান হাতের কনুইয়ে ও বুকে গুলিবিদ্ধসহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ২৫০ এর অধিক ছররা গুলি নিয়ে বেঁচে আছি। মৃত্যুকে ভয় পাই না। বিপ্লব একাই পাহাড় ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন যাবৎ পাহাড় থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করছে। আমি বাধা দিয়ে আহত হলাম। আমি এর বিচার চাই এবং সম্পূর্ণরূপে বালু উত্তোলন বন্ধ চাই।
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক জিতু বলেন, পাহাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবে চোরাকারবারিরা। আর আমরা বাধা দিতে গেলেই হামলার শিকার হব, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। আমি প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনারা আসামিদের গ্রেপ্তার করুন।
শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফুর রহমান বলেন, গায়ে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। কিন্তু তার আরো উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই তাকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে, তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, আমি নিজে হাসপাতালে গিয়ে আহতের সাথে কথা বলেছি। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা চলমান। তবে, অপরাধী কেউ ছাড় পাবে না।