সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অবৈধ ঘোষণা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও গণভোটের বিধান পুনরায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পূর্ণাঙ্গ আকারে প্রকাশ হয়েছে। রায়টি দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
১৩৯ পৃষ্ঠার এ রায়ে আদালত বলেছে, গণতন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গণতন্ত্র তখনই বিকশিত হয়, যখন তা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি।
আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেছেন, “দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের আত্মবিশ্বাস জনগণের মধ্যে জন্ম নেয়নি। যার ফলশ্রুতিতে জনগণের ক্ষোভ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মতো ঘটনা ঘটেছে।” আদালতের ভাষায়, এটি জনগণের আস্থার সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ।
রায়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একসময় জনগণের দাবি ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ফলে এটি শুধু একটি রাজনৈতিক সমঝোতা নয়, বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোর অন্যতম ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে।
২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেওয়া এই ঐতিহাসিক রায়ে আদালত আরও বলেন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই গণভোটের বিধান ছিল, যা একতরফাভাবে বাতিল করাটা জনগণের অধিকার হরণের শামিল।