পাবনার সুজানগরে মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহতের ঘটনায় গুরুতর আহত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফসহ ১০ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস নোটের মাধ্যমে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক তৌফিক হাসান আলহাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বহিস্কৃতরা হলেন সুজানগর উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব রউফ শেখ (৫২), ছাত্রদল নেতা শেখ কাউছার (২৮), যুবদল নেতা মনজেদ শেখ (৪৫), সুজানগর পৌর বিএনপি’র ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর খা (৬০), সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামাল শেখ (৪৬), পৌর যুবদল সদস্য মানিক খা (৩৮), সুজানগর এন এ কলেজ শাখার সভাপতি শাকিল খা (২৫), সুজানগর পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতি রুহুল খা (৪০), বিএনপিকর্মী লেবু খা (৬০) ও যুবদলকর্মী হালিম শেখ (৪০)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পাবনা জেলাধীন সুজানগরে রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এসকল নেতাকর্মীকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া সুজানগরের রক্তাক্ত সংঘাতের ঘটনায় মোলায়েম খা ও সুরুজসহ আরো যারা জড়িত ছিল তারা বিএনপি কিংবা এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ নয়। তাদের সাথে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব দুস্কৃতকারী সন্ত্রাসীদের সাথে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ যোগাযোগ বা সম্পর্ক রাখলে দল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান আলহাজ্ব বলেন, বহিষ্কারের বিষয়টি কেন্দ্র করেছে। গুরুতর আহত সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফকে বহিষ্কারের বিষয়টি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, এখনো মামলা হয়নি। কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। গ্রেপ্তারও নেই। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁ এর অনুসারী আশিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখের ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাউছার ও তার অনুসারীরা। এরপর এঘটনা মীমাংসা হলেও বুধবার দুপুরে আশিককে সিনেমা হলের সামনে আবার ডাকে কাউছাররা। এসময় কাউছারদের সঙ্গে দেখা করতে আশিক তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে ডেকে নিয়ে যান।
সেখানে কাউছার ও আশিকের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় সবুজ বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে আশিক ও সবুজ তাদের অভিভাবক ও বিএনপি নেতাদের জানায়। এরপর মজিবর খা, লেবু খা, মানিক, সুরুজসহ দলবদ্ধভাবে এসে কাউছারদের ওপর হামলা চালান। এসময় আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে থামাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে আহত করা হয়। এসময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। আহত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।