রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে অগ্নিদগ্ধে বিকৃত হয়ে যাওয়া নিহত পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে এ তথ্য জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন খান।
তিনি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গত দুইদিনে বিকৃত হয়ে যাওয়া পাঁচ মরদেহ বা দেহাবশেষ থেকে ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক বিভাগ। কিছুক্ষণ আগে পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। ডিএনএতে যাদের পরিচয় শনাক্ত হলো- ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, লামিয়া আক্তার সোনিয়া, আফসানা আক্তার প্রিয়া, রাইসা মনি ও মারিয়াম উম্মে আফিয়া।
এদিকে এ ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের রাজধানী মালিবাগে সিআইডি ভবনে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য নমুনা দেয়ার অনুরোধ জানায় সরকার। বুধবার (২৩ জুলাই) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ অনুরোধ জানানো হয়। এদিকে নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে আজও দিশেহারা বাবা-মা। সন্তানের জন্য অশ্রু ঝরাচ্ছেন দুর্ঘটনা কবলিত স্কুলের মূল ফটকের সামনে। কখনো চিৎকার করে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে চাইছেন সন্তানের খোঁজ।
মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির রাইসা মনির বাবা সাহাবুল ইসলাম৷ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে রাইসা মনি৷ প্রায় সম্পূর্ণ শরীর পুড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় রাইসার৷ রাইসার দেহাবশেষের ঠাঁই হয় সিএমইএইচে৷ এখনো বুঝে পায়নি আদরের সন্তানের মরদেহ৷ এরইমধ্যে আরেক অভিভাবক রাইসা মনিকে নিজের সন্তান দাবি করছেন৷ সন্তানের শারীরিক গঠন তার কাছে চিরচেনা তাই রাইসার জন্য এখন পাগলপ্রায় বাবা সাহাবুলও৷
এদিকে, সন্তান বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে জানেন না আফিয়ার মা৷ তাই স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে মূল ফটকের সামনেই নাড়িছেঁড়া ধনের জন্য আকুতি তার৷ ভোর থেকেই স্কুলের গেটে ভিড় করে আছেন উদ্বিগ্ন অভিভাবক আর শিক্ষার্থীরা৷
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে যারা বেঁচে গেছেন সেই সব শিক্ষার্থীদের তাড়া করছে দুঃসহ স্মৃতি৷ প্রিয় বন্ধু, সহপাঠীর সঙ্গে খেলা হবে না, দেখা হবে না স্কুল মাঠে কিংবা টিফিনের ফাঁকে৷ সকালে শিক্ষকরা আসেন স্কুলে। শোকস্তব্ধ তারাও। হতাহতদের তালিকা ও নিখোঁজদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে স্কুল কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করলেও গণমাধ্যমে কথা বলেননি কেউই৷ এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্য হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।