‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ’-এর প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ৫ আগস্ট গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি চিরস্মরণীয় দিন। তিনি বলেন, ঠিক এক বছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে “ফ্যাসিস্ট হাসিনা” দেশ ছেড়ে পালান এবং বাংলাদেশের জনগণ রাহুমুক্ত হয়। সেইদিন থেকেই ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং এটি সরকারি ছুটি হিসেবেও পালন করা হবে।
তারেক রহমান বলেন, একুশ শতকে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল—গুম, খুন, অপহরণ, নির্যাতন, আয়নাঘরের নির্মমতা, বিচার বিভাগের অকার্যকারিতা, ভোটাধিকার হরণ—তা ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। তিনি উল্লেখ করেন, লাখো মানুষ মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে গৃহচ্যুত হয়েছেন, পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়েছে, এবং দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে পড়ে।
তারেক রহমান আরও দাবি করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হন এবং প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আহত হন। কেউ অঙ্গহানির শিকার, কেউবা চিরতরে অন্ধ হয়ে গেছেন। তিনি ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “৭১ ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, আর ২৪ ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।
তারেক রহমান বলেন, শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে প্রয়োজন গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে বলেও তিনি জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, কেউ যেন হিটলারের নাৎসিবাদের মতো ফ্যাসিস্ট শাসনকে গৌরব হিসেবে না দেখে, এবং পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের সাফাই গাওয়ার কৌশলগত প্রচেষ্টা যেন গ্রহণযোগ্যতা না পায়।
তার বক্তব্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:
গণভবন, সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, এমনকি মসজিদের খতিব পর্যন্ত পালিয়ে যান, যা ইতিহাসে বিরল।
বাংলাদেশে আর কোনোদিন ফ্যাসিবাদ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে না, গণতন্ত্র হত্যা হতে দেওয়া হবে না।
রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন উগ্রবাদ ও চরমপন্থার উত্থানের পথ না হয়।
তারেক রহমানের আহ্বান:
দেশের সকল গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমার আহ্বান—এই ঐতিহাসিক জাতীয় ঐক্য যেন অটুট থাকে। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে, শহীদদের রক্ত যেন বিফলে না যায়।