পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শেখ হাসিনার সময়ে পুরো দেশটাই একটা জেলখানা ছিল। কেননা, আমরা কেউই মন খুলে কথা বলতে পারতাম না। নিজের মতো করে চিন্তা করতে পারতাম না। তাই আওয়ামী লীগের সময়ে আমার কাছে দেশটাকে একটা জেলখানা মনে হয়েছে।
বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘জুলাই কারাবন্দিদের স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আইন মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীরা যখন তাদের বন্ধুদের মরতে দেখলো তখন তারা একেবারে নিঃস্বার্থভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে। এই যে নিজের জীবনের মায়া ছেড়ে দিয়ে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে দাঁড়িয়ে গেছে, এই শক্তিটাই আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আর যে দেশটা আমরা গড়তে চাই, সেটা গড়তে হলে নিঃস্বার্থ, আত্মত্যাগের জায়গা থেকেই দেশটা গড়তে হবে।
তিনি বলেন, ‘আয়নাঘর’ শেখ হাসিনার শাসনামলের নিষ্ঠুরতার একটা অংশ। আমি যখন জেলে থাকা মানুষের কষ্টের কথা শুনলাম, তাদের কষ্ট কোনো অংশে আয়নাঘরে থাকা মানুষের কষ্টের কম মনে হয়নি। অভ্যুত্থানের সময়ে যারা জেলে গিয়েছেন তাদের কষ্টের কথা শুনেছি। তাদের নামের তালিকা যেমন থাকা দরকার, তাদের কষ্টের বর্ণনা ও কিন্তু আমাদের সংরক্ষণ করা দরকার।
অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কারাবন্দিদের একটি তালিকা জুলাই জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে একটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি। মানুষের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, রাজনৈতিক আদর্শের পরিচয় সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আমরা নিজেদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি।
দুর্ভাগ্যবশত অভ্যুত্থানের পরে আমাদের মধ্যে বিভাজন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পূর্বে অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিল। তিনি আরও বলেন, জুলাইকে আমাদের মনে চিরস্থায়ী করে রাখতে হবে। আমাদের প্রধান দায়িত্ব হলে যারা জুলাইয়ে শহীদ হয়েছে, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের যেন আমরা ভুলে না যাই।