বলিউড অভিনেতা আমির খান তার ভাই ফয়সাল খানকে এক বছর ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন। পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান অভিনেতা ফয়সাল খান। পরিবারের লোকজন ফয়সালকে ‘পাগল’ মনে করতেন। তার ভাষায়, তারা বলতেন, আমার সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে আর আমি পাগল। আমি সমাজের জন্য বিপজ্জনক। এসব কথাবার্তা হচ্ছিল। আমি নিজেকে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, আমি এই চক্রব্যূহ থেকে কীভাবে বের হবো। এটা আমার জন্য একদম চক্রব্যূহ হয়ে গিয়েছিল। আমি ফেঁসে গিয়েছিলাম। কারণ পুরো পরিবার আমার বিপক্ষে ছিল। সবাই আমাকে পাগল ভাবছিল।”
৫৯ বছর বয়সি ফয়সাল খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। কারণ আমির খান তাকে বন্দি করে রেখেছিলেন। ফয়সাল বলেন, “আমি নামাজ পড়তাম আর দোয়া চাইতাম। মাঝে মাঝে মনে হতো, হয়তো আব্বাজান আমাকে সাহায্য করবেন। কারণ উনি দ্বিতীয় বিয়ের পর পারিবারিক রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু আমি কীভাবে উনার কাছে পৌঁছাব? উনার ফোন নাম্বারও আমার কাছে ছিল না। আমির আমাকে বাড়িতে এক বছর বন্দি করে রেখেছিল।”
ফয়সালের ঘরের বাইরে দেহরক্ষী পাহারায় থাকতেন। তা উল্লেখ করে ফয়সাল বলেন, আমার মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছিল, আমি বাইরে যেতে পারতাম না। রুমের বাইরে দেহরক্ষী দাঁড়িয়ে থাকত। জোর করে ওষুধ খাওয়ানো হতো। এক বছর পর, ফয়সালের অনুরোধে আমির তাকে অন্য একটি বাড়িতে থাকতে দেন। এরপর তাকে একদম একা ছেড়ে দেন। কয়েক বছর পর, আমির খান তাকে আদালতে গিয়ে ‘সিগনেটরি রাইটস’ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে ফয়সাল বলেন, আমির বলল, আমরা তোমার সিগনেটরি রাইটস চাই। তোমাকে কাল আদালতে যেতে হবে এবং বলতে হবে, তুমি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারো না। একজন ডাক্তার বিচারকের সামনে বলবেন আর তোমার জন্য একজন গার্ডিয়ান নিযুক্ত করা হবে। এ কথা শুনে আমি খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমিরের কথায় আদালতে যেতে রাজি হন ফয়সাল। কিন্তু সেই রাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বলেও জানান এই অভিনেতা।
২০০৭ সালে ফয়সাল খান দুই দিন নিখোঁজ ছিলেন। তার আগে পুলিশের কাছে আমির খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। অভিযোগে ফয়সাল জানিয়েছিলেন, তার ভাই আমির তাকে জোরপূর্বক বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন। কারণ আমির মনে করেন, ফয়সাল মানসিকভাবে অসুস্থ।
এরপর ফয়সালকে পুনেতে খুঁজে পাওয়া যায়। মুম্বাইয়ে ফিরিয়ে এনে তার চিকিৎসা করানো হয়। ফয়সালের অভিভাবকত্ব নিয়ে আমির এবং তাদের বাবা তাহিরের আইনি লড়াইও হয়, যা ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। পরে আদালত ফয়সালের অভিভাবকত্ব তার বাবা তাহিরের কাছে প্রদান করেন। ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যায় আমিরের বাবা।
মাত্র ৩ বছর বয়সে বলিউড সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন ফয়সাল খান। ১৯৮৮ সালে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমায় অভিনয় করেন। তারপর ‘মেলা’, ‘দুশমনি’, ‘ডেঞ্জার’ প্রভৃতি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। তবে অভিনয়ে এখন নিয়মিত নন ফয়সাল। ২০২২ সালে সর্বশেষ মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘ওপান্ডা’ সিনেমা।