২২ আগস্ট ২০২৫ শুক্রবার
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৭ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

ইউক্রেন নিয়ে আলাস্কা বৈঠক নিয়ে ইউরোপের সতর্কতা

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৭ পিএম

ইউক্রেনের সীমানা জোর করে পরিবর্তন করা যাবে না বলে সতর্ক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। এই সতর্কতা এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ইউক্রেন ইস্যুতে আসন্ন আলাস্কা সম্মেলনের তিন দিন আগে। আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ইউরোপের ২৬টি দেশের নেতাদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের জনগণকে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের স্বাধীনতা দিতে হবে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক সীমান্ত জোর করে পরিবর্তন করা যাবে না এবং ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার নীতি অবশ্যই মানতে হবে। তবে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি। রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি একাধিকবার ইউক্রেন ইস্যুতে ইইউর সহায়তা আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতাদের এমন উদ্বেগের পেছনে রয়েছে মস্কোর কার্যকলাপ। বিশেষ করে, রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো এবং যেসব দেশে সোভিয়েত দখলের স্মৃতি এখনো তাজা, তারা সরাসরি হুমকি অনুভব করছে। এ অবস্থায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে, বাল্টিক দেশগুলো বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের নীতি ফিরিয়ে এনেছে এবং রাশিয়ার সীমান্তে বিশাল প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নির্মাণে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে পোল্যান্ড।

এর আগে আসন্ন আলাস্কা বৈঠক নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, সেখানে শান্তিচুক্তিতে ভূখণ্ড বিনিময়ের সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তিটি এমন হতে পারে যে রাশিয়া ইউক্রেনের পুরো দনবাস ও ক্রিমিয়া অঞ্চল নিজেদের দখলে রাখবে এবং খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চল ছেড়ে দেবে।

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে স্বীকার করেছেন, কিছু অঞ্চল বাস্তবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নয়। কারণ, এর জন্য ইউক্রেনের সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে, যা সংসদ ও গণভোটে অনুমোদন পেলে তবেই সম্ভব হবে। এই কঠিন প্রক্রিয়া প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সরকারকে সংকটে ফেলতে পারে। এদিকে বিশ্লেষক অধ্যাপক মার্ক গালিওটি জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির কথা এখন কেউ বলছে না। বাস্তবে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ দখল করে রাখলেও আন্তর্জাতিক সীমান্ত অপরিবর্তিতই থাকবে।

ইইউ নেতারা বলছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য বড় প্রভাব ফেলছে। তাই ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁরা দেশটিকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন। এ ছাড়া ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদ প্রাপ্তির পথেও তাঁদের সমর্থন বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন।

এদিকে ইউরোপীয় নেতাদের বিবৃতিটির নিচে ছোট অক্ষরে লেখা ছিল, হাঙ্গেরি এই বিবৃতির সঙ্গে একমত নয়। আগামী শুক্রবার আলাস্কায় পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) ইইউ নেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারও এতে যোগ দেবেন। তিনি বলেছেন, শান্তি ইউক্রেনের অংশগ্রহণে গড়ে তুলতে হবে, চাপিয়ে দেওয়া নয়। ইউরোপীয় নেতারা চান, ট্রাম্প ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তাকে যেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x