৯ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১:১৯ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

‘দীর্ঘস্থায়ী গণতন্ত্রের পথে নিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরতে চাই’

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১:১৯ এএম

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষকে দীর্ঘস্থায়ী গণতন্ত্রের পথে নেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে সর্বোচ্চ আদালতে আজ আপিল শুনানির দিন ধার্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা মনে করি ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। এই রায় ক্যন্সারের মতো। এই রায় বাতিল হওয়া দরকার। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়েছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার কারণে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, গনতন্ত্র, ভোটাধিকার ও আইনের শাসনসহ দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আগামী ২১ অক্টোবর আপিল শুনানিতে আমাদের প্রার্থনা থাকবে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়টি বাতিল করে বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করে দেওয়া। তিনি বলেন, আমার আরেকটা প্রার্থনা থাকবে যে, এই রায় লিখা থেকে শুরু করে স্বাক্ষর করা পর্যন্ত, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক যে অপরাধ করেছেন, তা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধ।

আমরা এটা আদালতের নোটিশে আনব। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানির পর এ বিষয়ে আপিল শুনানির আবেদন (লিভ গ্রান্ট) আজ মঞ্জুর করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

আগামী ২১ অক্টোবর এই আপিল শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ। আদালতে বিএনপি’র আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শরীফ ভূইয়া এবং অপর আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।

২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে, তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।

এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও এক ব্যক্তি আবেদন করেন।

এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x