সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের দাবিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চলমান বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছেন সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকেই আগামী শনিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে দাবি পূরণ না হলে আগামী রোববার নতুন করে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন। যার ফলে গণ পরিবহনের যাত্রী ও চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলন ঘিরে গঠিত সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্বকারী ও আলগী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. পলাশ মিয়া। তিনি বলেন, সকলের সাথে কথা বলেই স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী রোববার পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকব, সমাধান না হলে আবারও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
এর আগে দুপুর দেড়টার ভাঙ্গা ঈদগাহ জামে মসজিদ চত্বরে সর্বদলীয় নেতাদের উপস্থিতিতে স্থগিত বিষয়ে ঘোষনা দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা। এ সময় উপজেলা বিএনপির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সহিংসতাকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা বলেন, যারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় না, তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নিক্সনের টাকায় নিক্সনের ও কাজী জাফর উল্যাহর ইন্ধনে এই ধ্বংসাত্মক হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।
এদিন পূর্ব ঘোষিত তিনদিনের কর্মসূচির শেষ দিন ছিল। সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছের গুড়ি ও বিদ্যুতের খুটি ফেলে এক ঘন্টা অবরোধ করলেও সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি সহিংসতাকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় একত্রে টহল দিতে দেখা যায়।
সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মহাসড়কের হামিরদি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, বিদ্যুতের খুটি ও গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখেন। পরে নিজেদের সমঝোতায় সাড়ে ৯ টার দিকে তুলে নেন। তবে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে পাশের ফরিদপুর-২ আসনকে সংযুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে পরেরদিন ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গায় সকল মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
এছাড়া ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর পুনরায় দুটি মহাসড়ক ও ঢাকা-খুলনা রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ‘আলগী ও হামিরদি ইউনিয়ন এবং ভাঙ্গা উপজেলার সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে। এদিকে, হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শামসুল আজম জানান, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।