৮ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:০৬ এএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

ট্রাম্প-জিনপিং ফোনালাপ, কথা হলো যে সব বিষয়ে

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:০৬ এএম

টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই দুই নেতার আলাপ হয়। ফোনালাপে দুই দেশের বাণিজ্যের পাশাপাশি টিকটক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি ও বার্তা সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, শুক্রবার দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে আলোচনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এটা ট্রাম্পের দ্বিতীয় ফোনালাপ।

তবে আলোচনার বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি, দুই দেশের মধ্যে শুল্কনীতি এবং সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠক আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ফোনালাপের আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা টিকটক ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প বলেন, এ বিষয়ে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি আমরা। চীনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো অবস্থায় রয়েছে।

গত ৫ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রেসিডেন্ট শি তাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাল্টা আমন্ত্রণে ট্রাম্পও শি জিনপিংকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আহ্বান জানান। তবে এরপর দুই নেতার পক্ষ থেকে কোনো সফরের পরিকল্পনা নেয়া হয়নি। এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুক্রবার ফোনালাপে শি জিনপিং আবারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তারা মনে করছেন।

টিকটকের মালিকানা হস্তান্তরের আলোচনার সূচনা হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে। তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এটি যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের বড় আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। গত সোমবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও চীনের বাণিজ্য উপমন্ত্রী লি চেংগ্যাং জানান, স্পেনের মাদ্রিদে বৈঠকের সময় টিকটক বিক্রির জন্য একটি প্রাথমিক কাঠামোতে দুই দেশ একমত হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে চালু থাকবে।

চুক্তি হলে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা টিকটকের অন্তত ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনবেন, বাকি ২০ শতাংশ থাকবে চীনা বিনিয়োগকারীদের হাতে। ওরাকল, আন্দ্রেসেন হোরোভিৎজ ও সিলভার লেকসহ কয়েকটি মার্কিন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও টেক কোম্পানি বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে। নতুন কনসোর্টিয়ামের বোর্ডেও যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে যুক্ত হবেন।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে কংগ্রেসে পাশ হওয়া দ্বিদলীয় আইনে বলা হয়েছিল—টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হলে অন্তত ৮০ শতাংশ শেয়ার মার্কিন হাতে দিতে হবে। আইন কার্যকর হওয়ার আগেই ট্রাম্প বারবার সময় বাড়িয়ে দেন এবং বিকল্প সমাধানের চেষ্টা করেন। এদিকে চীন প্রথমে বিটড্যান্সের শেয়ার ছাড়তে নারাজ থাকলেও সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে কিছুটা নমনীয় হয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চুক্তি ট্রাম্প-শি বৈঠকের পথ সুগম করবে। অক্টোবরের শেষ দিকে ট্রাম্প এশিয়া সফরে গেলে তাদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চূড়ান্ত চুক্তির শর্তাবলি প্রকাশ করা হয়নি। তবে হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়া অন্য সব তথ্য কেবল অনুমান হিসেবে ধরা উচিত।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আশা প্রকাশ করেন, টিকটকের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছা যাবে। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ট্রাম্পের ভাষায় টিকটক হবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন একটি সম্পদশালী কোম্পানি।

এদিকে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক নির্ধারণের বিষয়ে একটি সমঝোতায় আসতে বিশ্বের দুই বৃহত্তর অর্থনৈতিক শক্তি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশ একে-অপরের ওপর বাণিজ্যে শুল্কের হার নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে দেয়। এর প্রভাব পড়ে বিশ্ব বাণিজ্যেও।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x