৮ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় কূটনীতিকদের ওয়াকআউট

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার জন্য মঞ্চে ঊঠতেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক প্রতিনিধিরা গণহারে ওয়াকআউট করেন। তবে একই সময় দর্শক সারিতে থাকা তার সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের প্রথম দিনে নেতানিয়াহু তার ভাষণ শুরু করার আগে সকল প্রতিনিধিদের শান্ত থাকতে বলা হয়।

নেতানিয়াহু মঞ্চে উঠতেই বহু প্রতিনিধি দ্রুত হল থেকে বেরিয়ে যান। গত বছরের মতো এবারও একই ধরনের প্রতিবাদের পুনরাবৃত্তি ঘটল। এই ওয়াকআউটের ফলে একসঙ্গে অনেকেই বেরিয়ে যাওয়ায় বেরোনোর পথে লম্বা লাইন তৈরি হয়। নেতানিয়াহু সেই সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। হলে উপস্থিত ব্রাজিলীয় প্রতিনিধিদলকে ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরে থাকতে দেখা যায়।

সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের প্রথম দিনে নেতানিয়াহু তার ভাষণ শুরু করার আগে সকল প্রতিনিধিদের শান্ত থাকতে বলা হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মিশন বিভিন্ন বিশ্বনেতাকে চিঠি পাঠিয়ে নেতানিয়াহুর ভাষণ বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিল এবং তাকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।

গাজায় যুদ্ধ এবং পশ্চিম তীরে দখলদারিত্ব শেষ করার জন্য ইসরায়েল বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে। তার ওপর ট্রাম্পের ওই হুঁশিয়ারির পর নেতানিয়াহু জাতিসংঘের ভাষণে কয়েকটি যুক্তিতে এর জবাব দিয়েছেন। প্রথমে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের অবশিষ্ট নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অস্ত্র নামিয়ে রাখুন। জিম্মিদের মুক্তি দিন। এটি করলে আপনারা বাঁচতে পারবেন। আর না করলে ইসরায়েল আপনাদের খুঁজে বের করবে।

এরপর তিনি কয়েকটি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ‘পপ কুইজের’ মতো সেগুলো পড়ে শুনিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক বলে স্লোগান দেয় কারা? নিজেই জবাব দিয়ে বলেন, ১. ইরান, ২. হামাস, ৩. হিজবুল্লাহ, ৪. হুতি ৫. সবগুলোই

এ সময় অধিবেশনকক্ষ জুড়ে হৈ হল্লা শোনা যায়। নেতানিয়াহু তখন ৫ নং পয়েন্ট ‘সবগুলো’-তে টিক দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথা উল্লেখ করে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি (ট্রাম্প) অন্য যে কোনো নেতার চেয়ে ভালো করেই জানেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একই হুমকির মুখে রয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের যোদ্ধাদের হামলার পর অনেক নেতাই ইসরায়েলকে সমর্থন করেছিলেন জানিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, কিন্তু এর পর থেকে সেই সমর্থন উবে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের শত্রু সবসময়ই ছিল। কিন্তু এখন মিত্ররাও ইসরায়েলের সমালোনা করছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেকেই এখন ইসরায়েলকে একঘরে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করছে। এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১০ টি দেশ ইসরায়েলের আপত্তির মুখেও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে দশকের পর দশক ধরে জিইয়ে থাকা সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তি দিয়েছে দেশগুলো।

ইইউ ইসরায়েলের ওপর ট্যারিফ এবং শুল্ক আরোপের চিন্তাভাবনা করছে। জার্মানি ইসরায়েলকে অস্ত্র রপ্তানি করা বন্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক দিনগুলোর জরিপে ইসরায়েল নিয়ে জনমত অনেক বেশি নেতিবাচকই দেখা যাচ্ছে। এদিকে, নেতানিয়াহুর একটি ভাষণ লাউডস্পিকারে করে গাজায় সম্প্রচার করেছে ইসরায়েল। ভাষণে তিনি বিভিন্ন দেশ কতৃক ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াকে ‘নিছক পাগলামি’ বলে অভিহিত করেছেন। কয়েকটি দেশের দেওয়া এই স্বীকৃতিকে ‘মর্যাদাহানিকর’ বলেছেন তিনি। এমনকি, নেতানিয়াহু ফের ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হতে না দেওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x