খাগড়াছড়িতে মারমা পাহাড়ি এক স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কয়েক দিন ধরে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’–এর ব্যানারে ডাকা সড়ক অবরোধ চলছে। চলমান অবরোধ, মিছিল ও সমাবেশের পর সহিংস পরিস্থিতির জেরে খাগড়াছড়িতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্কুলছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে আজও অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চলছে। অবরোধের কারণে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অবরোধ সমর্থকরা জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ পালন করছেন।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জেলা সদরে সাত প্লাটুন বিজিবিও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে। শহরের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অবরোধের সমর্থনে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিক্ষুব্ধরা অবস্থান নিয়েছেন। কিছু জায়গায় টায়ার জ্বালানো ও গাছের গুঁড়ি ফেলা হয়েছে।
অবরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল খাগড়াছড়িতে সহিংসতার পর পরিস্থিতি এখনো থমথমে। আতংকে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শনিবার সড়ক অবরোধ চলাকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২৩ জন আহত হন; তাদের মধ্যে ২১ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি পাঠানো হয়েছে, দুইজন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাজেক থেকে প্রায় ২ হাজার ২০০ পর্যটককে নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় খাগড়াছড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, শনিবার দুপুরের পর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উত্তেজিতদের সরাতে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী নতুন করে সহিংসতা এড়াতে তৎপর রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. ছাবের ও বিজিবি সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল দুপুরে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।