চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক আসন বরাদ্দের নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, আবাসিক হলে আসন পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সিজিপিএ কমপক্ষে ২.৯২ থাকতে হয়। কিন্তু ওই হলে ২.৬৫ সিজিপিএ পেয়েও শিবির-সমর্থিত ভিপি প্রার্থী নিয়ামত উল্লাহ একক আসনে বসবাস করছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এককভাবে অবস্থান করছেন। তিনি একই হলে শিবিরের শাখা সভাপতির দায়িত্বেও আছেন এবং আসন্ন হল সংসদ নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান বলেন, প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আমার দুটি আসন বরাদ্দের ক্ষমতা রয়েছে। নিয়ামত উল্লাহ নিয়মিত ডাইনিং ও খেলাধুলার কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন, সেই বিবেচনায় তাকে বিশেষভাবে আসন দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউট মিলে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২৮ হাজার। এসব শিক্ষার্থী থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মাত্র ১৪টি। এর মধ্যে আবাসিক সুবিধা পান ৩০ শতাংশ। বাকি ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী হলে থাকার সুযোগ পান না। বাধ্য হয়ে তাদের থাকতে হয় ক্যাম্পাসের আশপাশে অথবা ২২ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম শহরে। এ কারণে ফলাফলের ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
ফল কম হওয়ার পরেও কীভাবে একক আসন নিয়ে থাকছেন জানতে চাইলে নিয়ামত উল্লাহ জানান, তিনি গত মার্চে তার বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে দ্বৈত আসনের জন্য আবেদন করেন। এরপর গত মাসে তিনি একক আসন পান। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নিয়ামত উল্লাহ বিশেষ বিবেচনায় আসন পেয়েছেন। প্রত্যেক হলে ১০টির মতো আসন বিশেষ বরাদ্দ থাকে। নিয়ামত উল্লাহ আর্থিক সমস্যার কারণে আবেদন করেছিলেন। এ কারণে তিনি আসন পেয়েছেন।’
তবে বর্তমানে তিনি শিবিরের হল শাখার সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে যখন আসি, তখন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলাম। হলে থাকতে গেলে তখন ছাত্রলীগ করা লাগত, তাই ছাত্রলীগ করেছি।’ ওই সময় ছাত্রলীগ নেতাদের চাপের মুখে এসব পোস্ট দিয়েছেন দাবি করে নিয়ামত উল্লাহ বলেন, তিনি ২০২২ সালের জুনে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।