বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে ২৭ মিলিয়ন পাউন্ডের মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এই অর্থায়নের মাধ্যমে কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানীয় জনগোষ্ঠী উপকৃত হবেন।
ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্য এই নতুন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে।
ঘোষিত অর্থায়নের আওতায় রোহিঙ্গাদের খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ করা হবে। একইসঙ্গে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার নারী ও কিশোরীকে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া যৌন, শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের জন্যও সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
এই সহায়তা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএ এবং একাধিক আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, এই অর্থায়ন সরাসরি মাঠ পর্যায়ে জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। এটি শুধু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নয়, তাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণকেও সহায়তা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা যেন প্রাপ্য সুরক্ষা, মর্যাদা ও সুযোগ পান—সেই লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে যুক্তরাজ্য এ পর্যন্ত এই সংকটে ৪৪৭ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি সহায়তা দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম দীর্ঘমেয়াদি ও নেতৃত্বসুলভ প্রতিশ্রুতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ নিরসন, রাখাইন রাজ্যে অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ এবং বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর টেকসই ভবিষ্যতের জন্য আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বের গুরুত্বও পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং উন্নয়ন, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও কমনওয়েলথের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার জানিয়েছে।