১৮ জুন ২০২৫ বুধবার
প্রকাশ : ৪ মে ২০২৫, ৯:৫৬ পিএম

এ সম্পর্কিত আরও খবর

চুরির অভিযোগে দুই কিশোরের মাকে নাকে খত!

প্রকাশ : ৪ মে ২০২৫, ৯:৫৬ পিএম

👁 36 views

ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে প্রকাশ্যে মারধর ও তাদের মায়েদের নাকে খত দিয়ে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম দেলোয়ার হোসেন দেলু। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তবে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করেছেন দেলোয়ার হোসেন দেলু। কিন্তু, এ ঘটনার পরে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তার সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে সালিশ বৈঠকে এই ঘটনা ঘটে। সালিশ বৈঠকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেন দেলু লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় দুই কিশোরের মা নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইছেন। ভিডিওর অন্য অংশে দেখা যায়, কিশোরদের লাঠি দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দশ দিন আগে মাথিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি থেকে হাঁস ও কবুতর চুরি হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় দুই কিশোরকে সন্দেহ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়।

সালিশে সভাপতিত্ব করেন দেলোয়ার হোসেন দেলু। সালিশে দুই কিশোরের সঙ্গে তাদের মায়েদেরও ডাকা হয়। পরে অভিযুক্ত কিশোরদের মারধর করা হয়। তাদের মায়েদের বলা হয়, সন্তানদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারার দায়ে তাদের নাকে খত দিয়ে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে হবে।

অভিযুক্ত এক কিশোরের মা বলেন, আমার ছেলে যদি ভুল করে থাকে, তার বিচার হতে পারে। কিন্তু, আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করা হবে, তা কল্পনাও করিনি। আরেক কিশোরের মা বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। শুধু একজন মা হওয়ার কারণে আমাকে এত বড় অপমান সহ্য করতে হলো।

অভিযোগের বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, আমি কাউকে মারিনি। অভিযুক্ত কিশোরদের মায়েরা আমার কাছে আবদার করেছিলেন বিষয়টি যেন সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হয়। তারাই স্বেচ্ছায় নাকে খত দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরীন কান্তা বলেন, নারীকে এভাবে হেনস্তা করার অধিকার কারো নেই। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, সালিশ বৈঠকে নারীর প্রতি অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগে দেলোয়ার হোসেন দেলুর সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ঘিরে জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুকে রাকিব নামে একজন লিখেছেন, ছেলের দোষে মা কখনো দোষী হতে পারে না। ছেলের শাস্তি মা পেতে পারে না।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x